অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাস রুখতে জারিকৃত কারফিউ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িয়েছে সৌদি আরব। প্রতিদিন সন্ধ্যা ০৭.০০টা থেকে (রিয়াদ,জেদ্দা, মক্কা ও মদীনা শহরে প্রতিদিন বিকাল ০৩.০০টা থেকে) পরদিন সকাল ০৬.০০টা পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। গত ২৩ মার্চ ২১ দিনের জন্য এই কারফিউ জারি করা হয়। তবে ২৯ মার্চ আরেক নির্দেশনায় এই মেয়াদ অনির্দিষ্টকালের জন্য করা হয়।

এই সময়ে রিয়াদ, জেদ্দা, মক্কা ও মদীনা শহর থেকে বের হওয়া এবং অন্য কোন এলাকা থেকে এসব শহরে প্রবেশ নিষিদ্ধের নির্দেশনাও বলবত রয়েছে।

এর আগে গত ২৩ মার্চ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস রুখতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সৌদি আরব। করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেন বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ।

সে সময় সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ জারি থাকবে। তবে চিকিৎসাসহ জরুরি সেবা এই বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।

সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৪৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।

কারফিউয়ের সময়ে যেসকল সেক্টরের কর্মীরা তাদের পেশাগত কারণে সীমিত চলাচল করতে পারবেন তার একটি বিস্তারিত তালিকা দিয়েছে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা হলেন-

১. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রির সুপার মার্কেট, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, মাংশ, সবজি বিক্রি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টগন।

২. স্বাস্থ্য ও ফার্মেসী খাতে কর্মরতগণ।

৩. গণমাধ্যম কর্মীরা।

৪. খাদ্যদ্রব্য ও চিকিৎসা সামগ্রী আমদানি ও এ জাতীয় পণ্য পরিবহণ সংশ্লিষ্ট কর্মীগণ।

৫. অনলাইলে পণ্য বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা পণ্য পৌছে দেয়ার জন্য।

৬. হোটেল, মোটেল ও বোর্ডিং এর কর্মীরা।

৭. পেট্রোল পাম্প ও জরুরি বিদ্যুৎ পরিসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।

৮. আর্থিক পরিসেবা প্রদানকারী ও জরুরী ইন্স্যুরেন্স সেবা প্রদানকারী কোম্পানির কর্মিরা (নজম সহ)।

৮. টেলিকমিউনিকেশন ও ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী কোম্পানির কর্মীরা।

৯. শারিকা মিয়াহ (রাষ্ট্রীয় পানি কোম্পানি) এর কর্মীরা।

১০. নিরাপত্তা সংস্থা , স্বাস্থ্য দপ্তরসহ সরকারি পরিসেবা প্রদানকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

১১. জরুরি ঔষধ ও খাদ্য সামগ্রী ডেলিভারির যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

১২. এসময়ে মুয়াজ্জিনগণ শুধু মসজিদে আজান দেয়ার জন্য মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হতে পারবেন।

১৩. কুটনৈতিক মিশনে ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরতরা জরুরি প্রয়োজনে তাদের কর্মস্থলে যেতে পারবেন।

করোনা রুখতে আগে থেকেই মসজিদ বন্ধসহ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সৌদি আরব। বন্ধ রয়েছে মুসলিমদের প্রধান দুই মসজিদে নামাজ আদায়ও।

রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে দেশটিতে প্রবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। যারা উল্লিখিত কোনো খাতের কর্মী তাদেরকে অফিসিয়াল কাজের জন্য অফিসিয়াল গাড়িতে যাতায়াতের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।