অনলাইন ডেস্ক : ১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের স্কুলে হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্ট। মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বৈষম্যমূলক এবং সামাজিক বিভাজনকে আরও গভীর করতে পারে।
অস্ট্রিয়ার রক্ষণশীল নেতৃত্বাধীন সরকার এই বছরের শুরুতে এই নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করেছিল। তারা যুক্তি দিয়েছিল, এটি মেয়েদের ‘নিপীড়ন থেকে’ রক্ষা করার লক্ষ্যে।
২০১৯ সালে দেশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু সাংবিধানিক আদালত তা বাতিল করে দেয়।
এবার সরকার জোর দিয়ে বলছে, তাদের আইন সাংবিধানিক। যদিও বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, এটি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ এবং শিশুদের অস্বস্তিকর অবস্থানে ফেলতে পারে।
আইনটি ১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের সমস্ত স্কুলে ইসলামী ঐতিহ্য অনুসারে মাথা ঢেকে রাখার ‘হিজাব’ পরতে বাধা দেয়।
বৃহস্পতিবারের পার্লামেন্ট বিতর্কে শুধুমাত্র বিরোধী গ্রিন পার্টি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, হিজাব এবং বোরকাসহ সকল ধরণের ইসলামিক ঐতিহ্যের ‘পর্দার’ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এই নিষেধাজ্ঞাটি আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন স্কুল-বছর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ কার্যকর হবে।
মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন, হিজাব নিষিদ্ধ করা এখনো ‘একজন নারীকে কী পরতে হবে’ তা বলার সমান। তাকে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়ার পরিবর্তে এটি স্বাধীনতা কেড়ে নেয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অস্ট্রিয়াসহ সংস্থাগুলো বিলটির সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি বলেছে, এটি ‘মুসলিম মেয়েদের প্রতি স্পষ্ট বৈষম্য’ এবং এটিকে ‘মুসলিম-বিরোধী বর্ণবাদের প্রকাশ’ হিসাবে বর্ণনা করেছে।
খসড়া আইনটি আইজিজিও-এর কাছ থেকেও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। এটি দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত।
সংস্থাটি বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা ‘সামাজিক সংহতিকে বিপন্ন করে। শিশুদের ক্ষমতায়নের পরিবর্তে, তাদের কলঙ্কিত এবং প্রান্তিক করে তোলে।’
আমাজন নারী অধিকার সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাঞ্জেলিকা আটজিঙ্গার মতে, হিজাব নিষিদ্ধকরণ মেয়েদের এই বার্তা দেয় যে, তাদের শরীর সম্পর্কে (অন্য কেউ) সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ফ্রান্সে ২০০৪ সালে স্কুলের শিশুদের ধর্মীয় অনুষঙ্গের ‘চিহ্ন’ যেমন হিজাব, পাগড়ি বা ইহুদি টুপি পরা নিষিদ্ধ করে করা হয়েছিল।






