অনলাইন ডেস্ক : গ্রেহাউন্ড কানাডা তাদের বাস সার্ভিস স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা মহামারির শুরুতে তারা কিছু রুটে বাস চলাচল বন্ধ করেছিল। এখন কানাডার ভেতর সব রুটে তারা তাদের সেবা বন্ধ করে দিচ্ছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২০ মে মধ্যরাতের পর তাদের বাস আর কানাডার কোন রাস্তায় দেখা যাবে না। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সাল থেকে কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়া শুরু করে। এরপর ২০২০ সালে করোনা মহামারির আঘাতের পর অন্টারিও ও কুইবেকেও তাদের সেবা সীমিত হয়ে পড়ে। এখন তারা তাদের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানির মুখপাত্র স্টুয়ার্ট কেনড্রিক বলেন, করোনা মহামারির ছোবলের ফলে গত এক বছর ধরে কোম্পানির কোন আয় নেই। এ অবস্থায় কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সত্যিই অসম্ভব। আমাদের স্টাফ ও কাস্টমারদের প্রতি আমরা গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। এবং এতগুলো বছর আমাদের সাথে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গ্রেহাউন্ড কানাডা প্রায় ১০০ বছর যাবত কানাডায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবদান রেখে আসছে। এক প্রভিন্স থেকে অন্য প্রভিন্সে যাতায়াতের অনেকেই এই কোম্পানির সেবা নিয়ে থাকেন। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যারা অগ্রিম টিকেট কেটে রেখেছিলেন তাদের টাকা জুন মাসের মধ্যে পরিশোধ করে দেয়া হবে।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রভিন্সের বার্নাবির সিমন ফ্রেশার ইউনিভার্সিটির আরবান স্ট্যাডিজ বিভাগের প্রফেসর এন্থনি পার্ল বলেন, গ্রেহাউন্ড কানাডার বাস সার্ভিস বন্ধের খবরটি অপ্রত্যাশিত নয়। বেশ কিছ দিন ধরেই তারা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে আনছিলেন। যে কোন দিন এ ধরণের একটি চূড়ান্ত ঘোষণা শোনার অপেক্ষাতেই আমরা ছিলাম।

তবে গ্রেহাউন্ডের যুক্তরাষ্ট্র শাখা জানিয়েছে তারা সেখানে তাদের কার্যক্রম চালু রাখবে এবং কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি যোগাযোগ বজায় রাখবে।

এদিকে কানাডার বাস শ্রমিকদের সংগঠন অ্যামালগে টেড ট্রানজিট ইউনিয়ন (এটিইউ) জানিয়েছে গ্রেহাউন্ড কানাডার সিদ্ধান্তের ফলে কমপক্ষে ৪০০ লোক কাজ হারাবে। এই বেকারত্ব বৃদ্ধির দায় সরকারকেও নিতে হবে। এটিইউ প্রেসিডেন্ট জন ডি নিনো বলেন, এই বাস সার্ভিস ব্যবহার করে শহরের বাইরে থেকে লোকজন সহজেই তাদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারত। এখন তাদের যাতায়াত কঠিন হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের উচিত ছিল শতাব্দি প্রাচীন এই বাস সার্ভিসটি চালু রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। ​কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী ওমর আলগাবরা বলেছেন, গ্রেহাউন্ড কানাডার সিদ্ধান্তে সরকার হতাশ। কেননা এই সার্ভিসটি পুরো কানাডায় যোগাযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখে আসছিল। অনেকেই বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ এই বাসে যাতায়াত করতেন। তবে তিনি বলেন, তার সরকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে গ্রেহাউন্ডের শূন্যস্থান পূরনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। সূত্র : সিবিসি নিউ