অনলাইন ডেস্ক : বিয়ের আয়োজন মানেই আনন্দ-উচ্ছ্বাস, সাজানো মঞ্চ, ফুলে মোড়া আসর আর অতিথির কোলাহল। কিন্তু মানিকগঞ্জে দেখা গেল একদম ভিন্ন চিত্র। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিয়ের আসরে বসলেন এক হিন্দু যুগল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের অস্থায়ীভাবে খালি রাখা একটি অংশে বর ও কনেপক্ষ এই বিশেষ বিয়ের আয়োজন করেন। সাদামাটা পরিবেশে হলেও হাসপাতালের ভেতরেই বিয়ের আয়োজন হওয়ায় ঘটনাটি শহরজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেনের বাসিন্দা অরবিন্দ সাহার বড় ছেলে অভিজিৎ সাহার বিয়ের তারিখ আগে থেকেই ঠিক ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনটির আগেই অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ঢাকা থেকে ফেরার পথে ধামরাইয়ে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন বর। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও দুই পরিবারের সম্মতি ও কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে হাসপাতালের বিশেষ কক্ষে সম্পন্ন হয় এ ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন।

এ বিষয়ে হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট হেড ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসাধীন রোগী (বর) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার এক হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। সেদিনই তার বিয়ের দিন ছিল। পরিবার আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা গুরুত্ব সহকারে কনসালটেন্টদের সঙ্গে আলোচনা করি। রোগীর অবস্থা আগের তুলনায় স্থিতিশীল মনে হওয়ায় হাসপাতালের অব্যবহৃত অংশে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়। আমাদের কর্তৃপক্ষ সব সময় রোগীদের সেবায় আন্তরিক।’

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং কিছু চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। সাদামাটা আয়োজন হলেও মুহূর্তটি সবার জন্য আবেগঘন হয়ে ওঠে। হাসপাতালের ভেতরে এমন ভিন্নধর্মী বিয়ের ঘটনা মানিকগঞ্জে এর আগে দেখা যায়নি। অনেকে বলছেন, মানবিকতার এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।