অনলাইন ডেস্ক : অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রোববার (২৮ মার্চ) দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। এর আগে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দল বিএনপি হরতাল পালন করেছিল। সে হিসেবে ১ বছর ১ মাস ২৬ দিন (প্রায় ১৪ মাস) পর আবারও দেশে হরতাল ডাকা হলো।

গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে পূর্ণ ফল প্রকাশের আগেই তা প্রত্যাখ্যান করে হরতালের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম, হাটহাজারীসহ সারা দেশে হেফাজতের আন্দোলনরতদের ওপর হামলা ও ৪ জন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ২৮ মার্চ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে হেফাজত ইসলাম। একই ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

এদিকে হেফাজতের ঘোষিত হরতালে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ জাতীয় দল।

দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, হেফাজতে ইসলামের হরতাল কর্মসূচিতে আমার দলের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়েছে। এই হরতালে সম্পূর্ণ একাত্মতা ঘোষণা করছি। হরতালে আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে থাকব।

হেফাজতের হারতালে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন না দিলেও তা যৌক্তিক বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত সদস্যদের কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতর থেকে এ সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনায় চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের ওপর হামলার আশঙ্কায় ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানেও থাকতে বলা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতার চেষ্টা করবে, জ্বালাও-পোড়াও করবে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। কেউ যদি যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে, জানমালের ক্ষতির চেষ্টা করে, থানায় হামলা বা আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৬ মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। নিহতরা হলেন, রবিউল ইসলাম (২৩), মেরাজুল ইসলাম (২২) মিরাজুল ইসলাম, জামিল (২০) ও মিজান (৪০)।

এছাড়া শনিবার (২৭ মার্চ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ১৩ জন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদর উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।