কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (বামে) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

অনলাইন ডেস্ক : আগামী ২৩শে মার্চ দুই দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র কানাডায় আসছেন। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এটাই জো বাইডেনের প্রথম কানাডা সফর। দ্বি-পাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে আলোচনা ছাড়াও তিনি কানাডার পার্লামেন্টে বক্তব্য দিবেন। জো বাইডেনের সফর সঙ্গী হিসেবে তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনও কানাডায় আসছেন।

প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়, অটোয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যে সব আলোচনাগুলো প্রাধান্য পাবে, সেগুলো হচ্ছেÑ ইউক্রেনে রুশ সামরিক আগ্রাসনে ইউক্রেনের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা, হাইতির রাজনৈতিক অস্থিরতায় দুই দেশের সম্ভাব্য পদক্ষেপ, সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাকে আরও ফলপ্রসূ ও কার্যকরী করা, অভিবাসন ব্যবস্থা, জলবায়ু এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন।

এছাড়াও দুই নেতার আলোচনায় বিশেষ স্থান পাবে, নোরাড’ (নর্থ আমেরিকান এয়ারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড)’কে কিভাবে আরও বেশী আধুনিকায়ন করা যায়। উল্লেখ্য, গত মাসে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে যে চীনের বেলুন দেখা যায়, তা দুই দেশের প্রতিরক্ষা মহলকে অনেক বেশী ভাবিয়ে তুলেছে। যদিও তিনটি বেলুনকে ভ‚পাতিত করে কানাডায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ফেলা হয়, কিন্তু সমস্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে এই চীনের বেলুনগুলোর প্রবেশ দেশ দুটির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।

দুই নেতার আলোচনায় অবৈধ অভিবাসন বিষয়টি বিশেষ প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্য রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ স্থল সীমানা যা প্রায় ৯০০০ কিলোমিটারের মত এবং দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ সীমানা পাড়ি দিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেকেই অবৈধভাবে কানাডা ভ্রমণে এসে এখানে বসবাসের অনুমতি প্রার্থনা করে যা সামলাতে কানাডাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শুধু গত বছরই ৩৯,৫৪০ জন্য ব্যক্তি কানাডার সীমান্তে এসে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি প্রার্থনা করেন। এদের সিংহ ভাগ হচ্ছে, মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলো থেকে আসা জনগণ।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কানাডা সফরকে খুবই ইতিবাচক বলে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রæডো বলেন, বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন ধরনের সংকটের সময় জো বাইডেনের কানাডা সফর অনেক ক্ষেত্রে নতুন দিকের সন্ধান দিবে বলে আমি মনে করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে। তাছাড়া আমরা দুই দেশ হচ্ছি সবচেয়ে কাছের এবং সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ। আমরা সব সময় একে অপরের পাশে আছি এবং অবশ্যই আগামীতে থাকবো।
জো বাইডেনের এই সফরকে ব্যবসায়ী মহল খুবই ফলপ্রসূ মনে করছেন, তাঁরা মনে করেন, ব্যবসায়িক যে সব ক্ষেত্রে কিছুটা অসংযত অবস্থা আছে, তা অনেকটা দূর হয়ে যাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সফরের মধ্য দিয়ে। উল্লেখ্য, দুই দেশ পৃথিবীর অন্যতম বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। প্রতি বছর প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসায়িক লেনদেন হয় দুই দেশের মধ্যে।