স্পোর্টস ডেস্ক : শিরোপা স্বপ্নে বিভোর প্রতিপক্ষকে ন্যূনতম চ্যালেঞ্জও জানাতে পারল না ইউক্রেন। ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিনবার জালে বল পাঠাল ইংল্যান্ড। দাপুটে জয়ে উঠল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে। রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোয় শনিবার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের শেষ ম্যাচে ৪-০ গোলে জিতেছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। জোড়া গোল করেন হ্যারি কেইন, অন্য দুই গোলদাতা হ্যারি ম্যাগুইয়ার ও জর্ডান হেন্ডারসন। ২৫ বছর পর ইউরোর সেমি-ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড। সেখানে তারা মুখোমুখি হবে ডেনমার্কের।

আসরে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে নিজেদের জাল অক্ষত রাখা ইংল্যান্ড এই ম্যাচে সব দিক থেকেই আধিপত্য করেছে। বল দখলে কিছুটা এগিয়ে থেকে গোলের উদ্দেশে মোট ১০টি শট নেয় তারা, যার ৬টি লক্ষ্যে। আর আন্দ্রে শেভচেঙ্কোর দলের সাত শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। যদিও এর কোনোটিই তেমন ভীতি ছড়াতে পারেনি।

আগের ম্যাচের দুই গোলদাতার দারুণ বোঝাপড়ায় শুরুটা দারুণ হয় ইংল্যান্ডের। রাহিম স্টার্লিংয়ের ডি-বক্সে বাড়ানো থ্রু বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে প্রথম ছোঁয়াতেই জালে পাঠান কেইন। সপ্তদশ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন রোমান ইয়ারেমচুক। ডিফেন্ডার জন স্টোন্সের বাধা এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লেও কাছের পোস্টে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি তিনি, সতর্ক জর্ডান পিকফোর্ড ধরে ফেলেন সহজেই। বল দখলে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড ৩২তম মিনিটে হাফ চান্স পায়; তবে শেষ মুহূর্তে একটু বাঁক নেওয়া ডেকলান রিসের দূর থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।

কিছুটা ঝিমিয়ে পড়া লড়াইয়ে বিরতির পর প্রথম মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ম্যাগুইয়ার। বাঁ দিক থেকে ক্লাব সতীর্থ লুক শয়ের দারুণ ফ্রি কিকে হেডে গোলটি করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ডিফেন্ডার। চার মিনিট পরেই ইউক্রেনের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়। এই গোলেও অ্যাসিস্টের ভূমিকায় ডিফেন্ডার শ। তার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে হেডে আসরে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন কেইন।

৬২তম মিনিটে হতে পারতো কেইনের হ্যাটট্রিক; কিন্তু তার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক বুশচান। ম্যাসন মাউন্টের নেওয়া ওই কর্নারেই হেডে ম্যাচ বলতে গেলে শেষই করে দেন লিভারপুল মিডফিল্ডার হেন্ডারসন। অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্বে পা রাখা ইংল্যান্ড শেষ ষোলোয় হারিয়েছে জার্মানিকে। এবার উজ্জীবিত ইউক্রেনকে হারিয়ে ৫৫ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর স্বপ্নে আরেক ধাপ এগোল ইংলিশরা।

সাউথগেটের কোচিংয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালেও উঠেছিল তারা। সেখানে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হেরে হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গ। এবার দলটির সামনে সেই হতাশায় প্রলেপ দেওয়ার পালা। সেই ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর আরেকবার শিরোপা উৎসব করার দিন গুনছে ইংল্যান্ড সমর্থকরা।