অনলাইন ডেস্ক : ভারতের কেরালায় বাজি ভর্তি ফল খেয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা হাতির মৃত্যুর ঘটনায় সকলের মন যখন ভারাক্রান্ত, তখনই এক ব্যক্তি নিজের সম্পত্তির অর্ধেকটা লিখে দিলেন নিজের পোষ্য দুই হাতির নামে। কয়েক বছর আগে এই দুই পোষ্য হাতির মধ্যে একটি হাতি ওই ব্যক্তির প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন, তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তাদের নামেই নিজের ৫ কোটি রুপির সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন বিহারের বাসিন্দা আখতার ইমাম।

৫০ বছর বয়সী আখতার থাকেন পাটনার কাছে ফুলওয়ারি শরিফের জানিপুর এলাকায়। নিজের যখন মাত্র ১২ বছর বয়স তখন থেকেই এই দুইটি হাতিকে লালনপালন করে আসছেন আখতার। বর্তমানে মোতির বয়স ২০ এবং রানির বয়স ১৫ বছর। বাড়িতেই থাকে ওই দুইটি হাতি।

আখতার জানান, পারিবারিক সূত্রে আমি কয়েকটি হাতি পেয়েছিলাম। মোতি আর রানি তাদেরই বংশধর। আমার ছোটবেলা থেকেই ওরা ওই বাড়িতে আছে। মোতি ও রানি আমার পরিবারের সদস্যের মতো, তাদের ছাড়া আমি বাঁচবো না। আমি আমার সম্পত্তির অর্ধেক স্ত্রী ও বাকি অর্ধেকটা (৫ কোটি রুপি) সম্পত্তি মোতি আর রানিকে দান করেছি।

‘এশিয়ান এলিফ্যান্ট রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যানিম্যাল ট্রাস্ট’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান আখতার ইমাম জানান, একদিন আমাকে হত্যার একটা প্রচেষ্টা হয়েছিল। ঠিক সেই সময় হাতিই আমার প্রাণ বাঁচায়। যখন কয়েকজন অস্ত্রধারী আমার ঘরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে তখন হাতিই প্রচন্ড গর্জন করতে শুরু করে। আমি তখন জেগে যাই এবং চিৎকার শুরু করে দিই। পরে দুর্বৃত্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

আখতার বলেন, প্রাণীরা মানুষের মতো নয়, তারা খুবই বিশ্বস্ত। আমি বহু বছর ধরেই হাতি সংরক্ষণের ব্যাপারে কাজ করে চলেছি। আমি চাই না যে আমার মৃত্যুর পর আমার হাতি দুইটি এতিম হয়ে যাক।

নিজের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে আখতার জানান, পারিবারিক বিবাদের কারণে আখতারের স্ত্রী ও পুত্র গত ১০ বছর ধরে আলাদা থাকে। হাতি দুইটিকে নিজের সম্পত্তি লিখে দেওয়ার পরই তার ছেলে মেরাজ তাকে হুমকি দেয়। পশুপাচারকারীদের সাথে হাত মিলিয়ে মোতি আর রানিকে বিক্রিও করে দিতে চেয়েছিল তার ছেলে। যদিও তার আগেই সে ধরা পড়ে যায়। নিজের জীবনহানির আশঙ্কা করে বিহারের প্রধান বনপাল এবং পাটনার পুলিশ সুপারকে চিঠিও লিখেছেন আখতার।

হাতি দুইটির মৃত্যুর পর তাদের নামে লিখে যাওয়া ওই অর্থ ‘এশিয়ান এলিফ্যান্ট রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যানিম্যাল ট্রাস্ট’-এর তহবিলে দান করা হবে বলেও নিজের ‘উইল’এ লিখেছেন আখতার।