বাংলা কাগজ ডেস্ক : গত সেপ্টেম্বরে কানাডায় অনুষ্ঠিত ফেডারেল নির্বাচনে ৯০ হাজার পোস্টাল ভোট বাতিল হয়েছে। রেডিও কানাডার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে হাজার হাজার কানাডিয়ানের ভোট বিফলে গেছে। কেননা ডাকযোগে পাঠানো তাদের ব্যালট সময় মতো ভোট কেন্দ্রে পৌঁছায় নি। নির্ধারিত সময়ের পর কেন্দ্রে পৌঁছানোয় নির্বাচনী কর্মকর্তারা সেসব ব্যালট গণনার জন্য বিবেচনা করেন নি। বিরোধী দলগুলো এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অটোয়া প্রশাসন ও ইলেকশন কানাডার প্রতি দাবি জানিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফেলিক্স মেথিউ বলেন, ‘৯০ হাজার ব্যালট নিরাপদে যথাস্থানে পৌঁছল, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের একদিন পর। এটা অস্বাভাবিক। এটা ওইসব ব্যালটের মালিকদের প্রতি অবিচার। এই ঘটনায় ৯০ হাজার নাগরিকের মতামতকে অগ্রাহ্য করা হলো।

প্রসঙ্গত, ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে কানাডার ভেতরে এবং বাইরে ১.২ মিলিয়ন বিশেষ ব্যালট পাঠানো হয়। করোনা মহামারির কারণে যারা ভোট কেন্দ্রে যেতে চায়নি তাদেরকে ডাকযোগে ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে এসব ব্যালট বিতরণ হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো ডাকবাক্সে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়। এসব ব্যালটের ৮৪% নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোট কেন্দ্রে পৌঁছায় এবং গণনার অন্তর্ভূক্ত হয়। এছাড়া ৯% ব্যালট সময় মত পৌঁছালেও সঠিকভাবে পূরণ না করায় বাতিল হয়ে যায়। আর বাকি ৭% ব্যালট নির্ধারিত সময়ের পরে পৌঁছানোয় সেগুলো গণনা করা হয়নি। ইলেকশন কানাডার হিসাবে এ ধরনের ব্যালটের সঠিক সংখ্যাটি হচ্ছে ৯০ হাজার ২৭৪।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রয়েল মিলিটারি কলেজ অব কানাডার প্রফেসর হলি অ্যান গারনেট বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এক হিসাবে দেখা গেছে ২০১৯ সালের ফেডারেল ইলেকশনের চাইতে গত নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের চাহিদা ছিল ২২ গুন বেশি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এসব ভোটারকে সঠিক ভোট দান পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করতে পারে নি। এছাড়া অনেকে নিয়মানুযায়ী নির্বাচনের ৬ দিন আগে (১৪ সেপ্টেম্বর) ব্যালটটি পোস্ট করলেও ডাক বিভাগের জনবল সঙ্কটে তা সময় মত যথাস্থানে পৌঁছেনি।

বিরোধী দলগুলো এই ঘটনার জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে দায়ী করে বলছে, সব পক্ষের দবি উপেক্ষা করে তার একক সিদ্ধান্ত করোনাকালে নির্বাচন আয়োজন করার ফলেই এমনটা হয়েছে। তারা ভাবছে ভবিষ্যতে যাতে ভোটারদের মূল্যবান মতামত এভাবে বিফলে না যায় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। সূত্র : রেডিও কানাডা