epaselect epa06086397 US President Donald J. Trump attends the traditional military parade as part of the Bastille Day celebrations in Paris, France, 14 July 2017. The Bastille Day, the French National Day, is held annually on 14 July to commemorate the storming of the Bastille fortress in 1789. EPA/IAN LANGSDON

অনলাইন ডেস্ক : তবে কি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সাবেক গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির হাতের পুতুল ছিলেন? তাকে কি তাদের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে প্রায় ৪০ বছর ধরে? তাকে নিজেদের মতো করে গড়ে তুলেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন? তাহলে নামে বেনামে কেন রাশিয়ান ধনীরা ট্রাম্প ডেভেলপমেন্টে বিলাসবহুল ফ্লাট কিনেছেন? কন্ডোমিনিয়াম কিনেছেন? কেন এক পর্যায়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ইউরি ডুবিনিনের কন্যা, সুন্দরী নাতালিয়া ডুবিনিনার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন ট্রাম্প! অনুসন্ধানে এসব তথ্য বের করে এনেছেন মার্কিন সাংবাদিক ক্রেইগ উঙ্গার। তার লেখা নতুন বই ‘ইন আমেরিকান কম্প্রোম্যাট: হাউ দ্য কেজিবি কাল্টিভেটেড ডনাল্ড ট্রাম্প, অ্যান্ড রিলেটেড টেলস অব সেক্স, পাওয়ার, অ্যান্ড ট্রেচরি’-এ এসব প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরেছেন। তিনি এতে এমন সব প্রশ্নের সৃষ্টি করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন কিভাবে রাশিয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত ধনীরা কয়েক দশক ধরে ট্রাম্পের সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে তাকে বারবার সহায়তা করেছেন। তারা তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। এর মধ্যে ব্যাপকভাবে রিপোর্ট হয়েছে যে, রাশিয়ার বিপুলসংখ্যক মানুষ ট্রাম্পের বিভিন্ন ডেভলপমেন্ট প্রকল্পে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনে অর্থ পাচার করেছেন। বাজফিড নিউজ-এর ২০১৮ সালের এক তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প ব্র্যান্ডের কমপক্ষে ১৩০০ কন্ডো বিক্রি হয়েছে গোপন সব ব্যক্তিদের কাছে। এসব ক্ষেত্রে লেনদেন হয়েছে নগদ ক্যাশে।
ফলে আইনগতভাবে ক্রেতাদের পরিচয় উন্মুক্ত করা থেকে তারা থেকেছেন পর্দার আড়ালে। এজন্যই ক্রেতাদের আর্থিক পরিচয় এবং অন্যান্য পরিচয় সম্পর্কে কেউ কখনো জানতেও পারেনি। জানা গেছে, এসব কন্ডোর মূল্য গড়ে কমপক্ষে ১২ লাখ ডলার করে। এসবের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের আর্থিক জগতে যুক্ত হয়েছে আরও ১৫০ কোটি ডলার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ এসেছে রাশিয়ানদের কাছ থেকে। আর এসব ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে রয়েছে ডনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক পরিমাণ সম্পদ। এর বেশিরভাগই হয়েছে কয়েক দশক আগে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে অভিবাসী ডেভিড বোগাটিনের কথা বলা যেতে পারে। ১৯৮৪ সালে নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারে পাঁচটি কন্ডোর জন্য পরিশোধ করেছিলেন ৬০ লাখ ডলার। কিন্তু পরে তদন্তের জন্য তার এসব সম্পদ জব্দ করে কর্তৃপক্ষ। ফলে দাঙ্গা-সম্পর্কিত অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয় বোগাটিনকে। ট্রাম্পকে এভাবে আর্থিকভাবে শুধু তিনি একই সহায়তাকারী করেেেছন এমন নয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে জয়-লুড ইলেকট্রনিক্স-এর অংশীদার তামির ল্যাপিরের কথা। ২০১৪ সালে মারা যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি বসবাস করতেন ট্রাম্প টাওয়ারে। ট্রাম্প যখন নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প সো-হো ডেভেলপমেন্ট নিয়ে সঙ্কটে পড়েন, তখন তাকে আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছিলেন এই তামির ট্যাপির।
সাংবাদিক ক্রেইগ উঙ্গার বলেছেন, ২০০০ এর প্রথম দশকে প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট এর মধ্য দিয়ে আবারও সম্পদের মালিক হন ট্রাম্প। এক্ষেত্রে তার অংশীদাররা রাশিয়া থেকে লক্ষ লক্ষ ডলার এনে বিনিয়োগ করে। আর ট্রাম্পের নামের অধীনে বিভিন্ন ভবনের নেপথ্যে অর্থ যোগানদাতা হিসেবে থেকে যায়। ডনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিক ক্রেইগ উঙ্গার আরও লিখেছেন, তিনি হোয়াইট হাউসে বসবাস শুরু করার পর জনগণ বারবার প্রশ্ন করতে থাকে ট্রাম্পের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক কি? এটা খুব সহজ বিষয় ছিল যে, তারা তার অংশীদার হয়ে উঠেছিল।
অন্যদিকে ডনাল্ড ট্রাম্প যখন আরো বেশি পরিচিতি অথবা বিখ্যাত হওয়া শুরু করেন তখন তার প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির। সাংবাদিক উঙ্গার লিখেছেন- সোভিয়েত উদ্বুদ্ধ হয়েছিল যে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে ট্রাম্প প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারেন। ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘের বিজনেস সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ইউরি ডুবিনিন। ওই সময় তার পাশে বসেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ফলে যে সমালোচনা হয় তার জবাবে ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেনম, তিনি ক্রেমলিনের সাথে যথাযথভাবে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি কোনো অপরাধ করেননি। স্বীকার করেছেন এই সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকারের একজন অংশীদার হয়ে ওঠেন। যার ফলে ক্রেমলিনের বিপরীতে তিনি একটি হোটেল গড়ে তুলতে সক্ষম হন। সাবেক মেজর ইউরি শভেটসের মতে জাতিসংঘে সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ডুবিনিনের ঘরে ছিলেন সুন্দরী একটি মেয়ে। তার নাম নাতালিয়া ডুবিনিন। তিনি কাজ করতেন জাতিসংঘে। মূলত তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প।
১৯৮৭ সালে স্ত্রী ইভানাকে নিয়ে প্রথম রাশিয়া সফরে আসেন ট্রাম্প। এই সফরের ইঞ্জিনিয়ারিং করেছিলেন নাতালিয়া ডুবিনিন। ট্রাম্প যখন মস্কো পৌঁছলেন তখন তাকে রাজকীয় অতিথির মত আপ্যায়িত করা হলো। পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো এমন সব ব্যক্তির সাথে, যারা তার অহমিকাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে মার্কিন সাংবাদিক ক্রেইগ উঙ্গার স্বীকার করেছেন, এই সফরে কেজিবি সম্পর্কিত ছিল কিনা সে বিষয়ে ট্রাম্প সচেতন ছিলেন- এমন কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।