রাজীব আহসান, কানাডা : অর্থনীতির সঙ্গে তাল মেলাতে অনেক ক্ষেত্রেই কানাডার বিভিন্ন প্রদেশের প্রিমিয়ার, সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং নীতি-নির্ধারকদের অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে।

করোনা মহামারির এ সময়ে অনেকেই বাড়িতে বসে কাজ করেছেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর গতি আগের মতো তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। লকডাউনের শিথিলতায় রেস্টুরেন্ট ব্যবসাগুলো খুলতে শুরু করলেও তেমন ব্যবসা করতে পারছে না।

ক্ষুদ্র আকারের অনেক ব্যবসা স্তিমিত হয়ে আছে এবং অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। করোনার কালো থাবায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এয়ারলাইনস ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসাগুলো। আর এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেক বেগ পেতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘাটতি পূরণে যদি ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার এগিয়ে না আসে তাহলে মূলধনী প্রকল্পগুলো হয় বাতিল করতে হবে, না হয় পিছিয়ে দিতে হবে এবং রিজার্ভ তহবিল থেকে অর্থ ধার করতে হবে।
ইতোমধ্যে কানাডায় ৬০০ কর্মী ছাঁটাই করছে হাডসন’স বে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত লকডাউনের কারণে স্টোর খোলা রাখা সম্ভব না হওয়ায় কানাডাজুড়ে ৬০০ কর্মীকে স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করতে যাচ্ছে হাডসন’স বে কোম্পানি। এ তথ্য জানিয়ে খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র টিফানি বৌর বলেন, কোম্পানির প্রায় অর্ধেক স্টোরই বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
টিফানি বৌর বলেন, পরিস্থিতির কারণেই হাডসন’স বে কোম্পানিকে এই সমন্বয় করতে হচ্ছে। কঠিন এই সময়ে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদের প্রতি স্বচ্ছ আচরণ ও সম্মান দেখানোর বিষয়ে কোম্পানি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ছাঁটাই নিয়ে উদ্বিগ্ন হাডসন’স বে কোম্পানির ৪০ জনের মতো কর্মী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান এমপ্লয়মেন্ট আইনজীবী লিওর স্যামফিরু। স্যামফিরু টুম্পার্কিন এলএলপির এই অংশীদার বলেন, কর্মীদের তথাকথিত ওয়ার্কিং নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যার অর্থ হলো ছাঁটাইয়ের আগপর্যন্ত তারা কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। স্টোর যেহেতু বন্ধ তাই এ ধরনের নোটিশ অযৌক্তিক এবং হাডসন’স বে কোম্পানির উচিত নোটিশের পরিবর্তে কর্মীদের বেতন পরিশোধ করা।

হাডসন’স বে কোম্পানির কর্মী ছাঁটাইকে অন্যায্য বলেও মন্তব্য করেন স্যামফিরু। তিনি বলেন, হাডসন’স বে কোম্পানির পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন কর্মীরা ১০ থেকে ৩০ বছর ধরে কোম্পানিতে কাজ করবেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা কোম্পানির টরন্টো, অটোয়া, ক্যালগেরি ও ভ্যানকুভারের স্টোরগুলোতে বিক্রয়কর্মী ও মধ্যমসারির ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, কানাডার সরকার করোনা মহামারির প্রথম থেকেই নাগরিকদের সুস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা এখনো বলবত রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অব্যাহত করোনার এ সময়ে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। অন্যদিকে শুরু হওয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগও ধীরে ধীরে কানাডিয়ানদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা রাখবে।