অনলাইন ডেস্ক : প্রায় তিন সপ্তাহ ‘ফ্রিডম কনভয়’ এর আন্দোলনের মুখে অশান্ত অটোয়া অবশেষে পুলিশি তত্পরতায় গত রবিবার থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। উল্লেখ্য, গত ২৮শে জানুয়ারি থেকে কানাডার ট্রাক চালকদের বাধ্যতামূলকভাবে কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন নেয়ার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক চালকরা অটোয়ার পার্লামেন্ট হিল এ জমায়েত হয়। ধীরে ধীরে তাদের এই সমাবেশ সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হতে থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শত শত ট্রাক অটোয়ার রাস্তা দখল করে কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালাতে থাকে। তাদের এই সমাবেশে অটোয়ার বেশ কিছু জায়গার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রচণ্ডভাবে অসুবিধার মধ্যে পড়ে। ট্রাক চালকদের এই আন্দোলন ঠেকাতে ফেডারেল সরকারকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সাথে সাথে ইমার্জেন্সী এক্ট জারি করতে হয়।

অটোয়ার অন্তবর্তীকালীন পুলিশ প্রধান স্টিভ বেল জানান, এই সমাবেশের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ১৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৩৯১টি কেইস ফাইল করা হয়েছে। তিনি জানান, যাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাদের সকলেই পুলিশের কাজে বাধা প্রদান, আদালতের আইন অমান্যকরণ এবং জন জীবন হুমকির দোষে দোষী। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে দিতে পুলিশ নিরবিছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ক্রিস হার্কিন্স জানান, দোষী সাব্যস্ত ট্রাক ড্রাইভারদের ব্যক্তিগত এবং বাণিজ্যিক গাড়ির লাইসেন্স সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আইন ভঙ্গ করে অটোয়ার বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নেয়া ৭৬টি যানবাহনকে পুলিশ উঠিয়ে নেয় এবং এদের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

তবে গত রবিবার অটোয়ার পার্লামেন্ট হিল এলাকায় পুলিশের তত্পরতার মধ্যেও সামান্য কিছু বিক্ষোভকারীদের দেখা যায় যারা সরকারের এই উচ্ছেদ কাজের সমালোচনা করে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করলেও তাদের বিক্ষোভে কোন বাধা দেয়নি এবং তাদেরকে ফ্রিডম কনভয় এর সমাবেশ কেন্দ্রের কাছে ভিড়তে দেয়নি।

এদিকে পার্লামেন্ট হিল এর দক্ষিণের ব্যাংক স্ট্রীটের বাসিন্দা মেরি অ্যারে জানান, দীর্ঘদিন পর তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে। এই কয়েক সপ্তাহ বিক্ষোভকারীদের অবস্থান, চেঁচামেচি এবং গাড়ির হর্ণের শব্দ তাদের জীবনকে গভীর সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। মেরি আরও জানান, তাদের এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিক্ষোভকারীদের ব্যানার, ফেস্টুন এবং আবর্জনা এলাকার স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেরাই পরিষ্কার করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আর কখনও যেন তাদেরকে এমন সংকটের মধ্যে আর না পড়তে হয়।
গত শুক্রবার অটোয়া পুলিশ টুইট এর মাধ্যমে জানায়, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে এই অভিযানে কেউ নিহত হয়নি এবং উল্লেখ করার মত কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।