শাহনুর চৌধুরী : কানাডায় চলমান ফ্রিডম কনভয় বিক্ষোভ ও অবরোধ দমনে ফেডারেল সরকারের জরুরী আইন চালুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডিয়ান সিভিল লিবার্টিজ অ্যাসোসিয়েশন (সিসিএলএ)।

সরকারের করোনা বিধি-নিষেধ ও বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন আদেশের বিরুদ্ধে গত ৩ সপ্তাহ ধরে কানাডায় চলছে ফ্রিডম কনভয় বিক্ষোভ। এতে অটোয়া শহর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়া সীমান্ত ক্রসিংগুলো অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউ এস-কানাডা বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৪ ফেব্রয়ারি প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো জরুরী আইন জারির আহ্বান জানালে অটোয়াতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন মেয়র। এই আইন জারির পক্ষে ফেডারেল সরকারের যুক্তি হচ্ছে-বিক্ষোভ ও অবরোধের ফলে কানাডার অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে ১৯৮৮ সালে পার্লামেন্টে অনুমোদনের পর এই প্রথম দেশে আইনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এদিকে জরুরি আইনে নাগরিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে দাবি করে ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়েছে সিসিএলএ। সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক নোয়া মেন্ডেল সোহন বলেছেন, জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করছে না এবং করতে পারবেও না। এই আইন নাগরিকদের ‘চার্টার অধিকারের’ পরিপন্থী। তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ ও হিংসাত্মক কার্যকলাপের অভিযোগ আছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব অভিযোগের সত্যতাও আছে। কিন্তু তাই বলে নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতার সনদের পরিপন্থী কোন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া যাবে না। এ ধরনের ব্যবস্থা প্রবর্তনের ক্ষমতা জনগণ কাউকে দেয়নি।

প্রসঙ্গত, জরুরী আইন অনুযায়ী ফেডারেল সরকারকে বিক্ষোভ দমনে শক্তি প্রয়োগে অস্থায়ী ক্ষমতা দেয়। এই আইনের অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে আছে- নির্দিষ্ট এলাকায় ভ্রমণ নিষিদ্ধ, বেআইনি সমাবেশে বাধা, যে কারো ব্যাংক হিসাব জব্দ করা বা লেনদেন সীমিত করা ইত্যাদি।

জরুরী আইন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাউজ অব কমন্সে দিনব্যাপি বিতর্ক হয়েছে। এ সময় ট্রুডো তার সিদ্ধান্তের পক্ষে বলেন, অবরোধ এবং দখল অবৈধ। তারা জন নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এনডিপিও ট্রুডোর বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এর আগে সোমবার থেকেই আইনটি কার্যকর হয়েছে।

সিসিএলএ আইনটির বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দেয়ার পর কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনও আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, কানাডার জরুরী ক্ষমতা আইনটি মানবাধিকারের জন্য উদ্বেগজনক। সূত্র : সিবিসি