অনলাইন ডেস্ক : ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ও সংঘাতের জন্য সারা বিশ্বের মতো টরন্টোতে বসবাসরত রাশিয়ান বংশদ্ভূতরাও উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের জন্য তারা চিন্তিত। একই সাথে তারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পদক্ষেপে দুঃখিত ও লজ্জিতবোধ করছেন। পরিসংখ্যান কানাডার হিসাব অনুযায়ী টরন্টোতে ১ লাখেরও বেশি রাশিয়ান বংশদ্ভূত লোকের বসবাস রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে পুতিন প্রতিবেশি ইউক্রেনের ওপর ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিচালনার নির্দেশ দেন। এর পর পরই দেশটির ওপর ব্যাপক হামলা শুরু হয়। লাখ লাখ লোক প্রতিবেশি দেশগুলোতে পালিয়ে যায়। শত শত লোক নিহত হয়। বিশ্বজুড়ে পুতিনের নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অন্যান্য অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানান অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে। টরন্টোর নাথান ফিলিপ স্কোয়ারে গত বৃহস্পতিবার শত শত লোক রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া নাতালিয়া মৌদ্রাক বলেন, পুতিন ইউক্রেনে যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন তার জন্য আমরা খুবই দুঃখিত ও লজ্জিত বোধ করছি। রাশিয়ায় বড় হওয়া নাতালিয়া এখন টরন্টোতে বসবাস করেন। তিনি আরও বলেন, নিজেকে রাশিয়ান ভাবতে লজ্জা লাগছে। তাই নিজেকে এখন থেকে একজন ‘গর্বিত কানাডিয়ান’ বলে মনে করব। পুতিন যা করছে এটা ভুল, এটা ঠিক নয়। তাই আমরা এর বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, অভিযান শুরুর পর থেকেই তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনে বসবাসরত বন্ধুদের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছেন। তারা সবাই এই যুদ্ধের বিরোধীতা করেছেন।
নতালিয়া তার ক্ষোভ প্রকাশ করলেও টরন্টোভিত্তিক ব্যবসা-বানিজ্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত অনেক রাশিয়ান প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকার করেছেন। তারা পুতিনের ভুল নীতির কারণে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছেন।
এদিকে টরন্টো শহরের কেন্দ্রস্থলে কলেজ স্ট্রিট ও ইউনিভার্সিটি এভিনিউয়ের কাছে হেনরি স্ট্রিটে হলি ট্রিনিটি রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। চার্চের আর্চবিশপ ভ্লাদিমির মালচেনকো বলেছেন, ক্রিমিয়া ও পূর্ব উইক্রেনের অঞ্চলগুলি নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে সংঘাত চলছে। গির্জার অনেক রাশিয়ান ও ইউক্রেনিয়রা একটি লড়াইয়ের আশঙ্কা করছিল। কিন্তু তা এত ব্যাপক আকারে হবে বলে কেউ কল্পনা করেনি। আমরা সবাই এখন ইউক্রেনের জনগণের জন্য দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করছি এবং প্রার্থনা করছি দ্রুত যেন এই সংঘাতের অবসান হয়। ইউক্রেনের জনগণের শান্তির জন্য এই ‘অন্যায় যুদ্ধ’ যত দ্রুত সম্ভব থামাতে হবে। সূত্র : সিবিসি