অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় ঘুমের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার বেড়েছে। অপমৃত্যুর কারণ তদন্তকারি দল ও চিকিত্সকদের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে ‘অনিরাপদ ঘুমের’ জন্য কানাডায় ১ হাজার ৩৩৮ টি মিমুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অন্টারিও, ম্যানিটোবা ও কুইবেকে আদিবাসী শিশুদের ঘুমের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি দেখা গেলেও অন্য অনেক প্রদেশ ও অঞ্চলে এই হিসাব রাখা হচ্ছে না।
উল্লেখিত ৩টি প্রদেশের হিসাবে দেখা গেছে শিশু মৃত্যুর বিভিন্ন কারণের মধ্যে ঘুমের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশ বেশি। বিশেষ করে আদিবাসী শিশুরা ঘুমের মধ্যে এমন হারে মারা যাচ্ছে যা বেশ অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আর অনিরাপদ ঘুমের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-এক বিছানায় গাদাগাদি করে বেশি লোকের ঘুমমানো, অতিরিক্ত শক্ত বিছানা অথবা প্রয়োজনের তুলনায় ছোট বিছানা।
গবেষকদের অনেকে বলছেন, একটি শিশুর মৃত্যুর জন্য অনিরাপদ ঘুমের ঝুঁকি কতটা ভ‚মিকা পালন করে তা সব সময় পরিষ্কার নয়, তবে নিরাপদ ঘুমকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত এবং এ বিষয়ে প্রতিটি পরিবারকে আরো কিছু করা দদরকার। অন্যদিকে মারা যাওয়া ১৩ শরও বেশি শিশুর মধ্যে কতজন আদিবাসী ছিল তা সঠিক বলা প্রায় অসম্ভব। কেননা শিশু মৃত্যুতে আলাদাভাবে জাতিগত পরিচয় লিখে রাখার কোন নিয়ম নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদিবাসীদের জন্য আরো ভাল স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সিবিসি নিউজের পক্ষে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে ৫টি প্রদেশ ও অঞ্চলে গুমের মধ্যে শিশুদের মৃত্যুর আলাদা কোন তত্য নেই। এমন কি অন্টারিওতে গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান অফিস নবজাতক শিশুদের মধ্যে আদিবাসী শিশু কতজন সেই সংখ্যা জানাতে পারেনি। রেজিস্টার জেনারেল অফিস বলেছে, নিবন্ধনের সময় জাতিগততা বা আদিবাসীতার তথ্য সংগ্রহ করা হয় না।
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডালা লানা স্কুল অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ড. জেনেট স্মাইলি বলেছেন, একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ জন্ম নিবন্ধনের অভাব পরিসংখ্যানকে ভুল শ্রেণীবিভাগের দিকে পরিচালিত করে। তার মতে ফার্স্ট নেশনস ও ইনুইট শিশুরা অ-আদিবাসী শিশুদের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ বেশি মারা যায়। তিনি আদিবাসী শিশুদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, এমনিতেই পরিসংখ্যান সম্পূর্ণ ছবি প্রকাশ করে না। তার উপর ভুল শ্রেণীকরণ করা হলে আপনি সসঠিক তথ্য থেকে অনেক দূরে চলে যাবেন।
২০২১ সালের অক্টোবরে অন্টারিওতে প্রধান তদন্ত কর্মকর্তার অফিস থেকে জানানো হয় যে ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের শুরু পর্যন্ত ‘ঘুমজনিত মৃত্যুর’ ৫৫ শতাংশ শিশু ছিল আদিবাসী।
গত বছর হেলথ কানাডা নিরাপদ ঘুমের বিষয়ে তার নির্দেশিকা আপডেট করেছে। ঘুমের সময় শিশুদের কীভাবে নিরাপদ রাখা যায় তার বিশদ বিবরণ এতে দেয়া হয়েছে। হেলথ কানাডা বলছে, শিশুর ঘুমানোর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হল দোলনা বা বেসিনেট। অন্যদিকে সোফা বা অতিরিক্ত নরম বিছানা দুর্ঘটনা ও শ্বাসরোধের ঝুঁকি বাড়ায়। স্মাইলি বলেন, যদি আমাদের পর্যাপ্ত বাসস্থান না থাকে তাহলে আমরা শিশুদের নিরাপদ রাখতে পারব না। সূত্র : সিবিসি