অনলাইন ডেস্ক : ২০২১ সালে কানাডায় প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে। গত বুধবার ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোর গবেষকদের প্রকাশিত একটি নতুন সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১৪ লাখ। কানাডার গৃহস্থালী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২০২১-এর সমীক্ষা অনুসারে মোট ১০টি প্রদেশ মিলে দেশের প্রায় ১৬ ভাগ পরিবারই এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। গবেষণায় মহামারীর গোটা সময়কাল এবং রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতির বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত প্রদেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হারের দিকে নজর দেয়া হয়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন যে, সমস্যাটি গত তিন বছরেও উন্নতির দিকে যায়নি। ভ্যালেরি তারাসুক, ইউ অফ টি-এর টেমার্টি ফ্যাকাল্টি অফ মেডিসিনের পুষ্টি বিজ্ঞানের অধ্যাপক গত বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “আমরা কানাডায় নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কোন স্পষ্ট উন্নতি দেখিনি।”
সমীক্ষা অনুসারে, প্রদেশগুলোর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার বড় পার্থক্য রয়েছে। যেখানে কুইবেকের ১৩ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন, সেখানে আলবার্টার ২০ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবার এ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। অন্যদিকে সামগ্রিক এবং গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ক্ষেত্রে অন্টারিও মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল।
প্রুফ নামে পরিচিত তারাসুকের গবেষণা দল, ২০২১ সালে সংগৃহীত পরিসংখ্যান কানাডার কানাডিয়ান আয় সমীক্ষায় ৫৪ হাজার পরিবারের থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই করেছে। গবেষকরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে খাদ্যে অপর্যাপ্ত বা অনিরাপদ প্রবেশাধিকার” হিসাবে সংজ্ঞায?িত করেছেন। অন্টারিওতে ২০২১ সালে গড়ে ছয়টি পরিবারের মধ্যে একটি বা ১৬ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার খাদ্যে অনিরাপদ ছিল। অর্থাৎ প্রদেশটিতে ২৩ লাখ মানুষ খাদ্য সমস্যার মধ্যে ছিলো। সেই সাথে প্রদেশের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বা ২ লাখ ৫৯ হাজার পরিবার গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হয়েছে। যার অর্থ পরিবারের সদস্যরা খাবার পায়নি, খাবার গ্রহণ কম করেছে অথবা অর্থের অভাবে না খেয়ে দিন পার করেছে।
সমস্যা অব্যাহত : প্রতিবেদনের নির্বাহী সারাংশে বলা হয়েছে, “গৃহস্থালীর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা হল বস্তুগত বঞ্চনার একটি চিহ্ন, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিক‚লতার অন্যান্য সূচকের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। নি¤œ আয়ের পরিবারগুলো খাদ্য নিরাপত্তাহীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।” গবেষকরা বলছেন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার উচ্চ হার বজায় রয়েছে এবং মানব স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য-পরিচর্যা ব্যবস্থার ওপর প্রভাবের কারণে এটি “গভীরভাবে উদ্বেগজনক”। তারা বিশ্বাস করে যে, আয় মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে ব্যর্থ হলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সমস্যা আরো খারাপের দিকে যাবে। “কানাডা জুড়ে পারিবারিক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ক্রমাগত বিস্তৃতি এবং এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত দুর্বলতার ধরণগুলো ফেডারেল এবং প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক আরো কার্যকর ও প্রমাণ-ভিত্তিক নীতি প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরই গুরুত্বারোপ করে, রিপোর্টের নির্বাহী সারাংশে এমনটি বলা হয়েছে? প্রতিবেদনে সরকারকে এমন পরিবারগুলোর অক্ষমতাকে মোকাবেলা করার আহ্বান জানানো হয়েছে যারা কর্মসংস্থানের আয়ের উপর নির্ভরশীল কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে অক্ষম। তাছাড়া কর্মরত বৃদ্ধ প্রাপ্তবয়স্কদেরও মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত আয় রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে? সূত্র : সিবিসি