অনলাইন ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলা ও ফিলিস্তিনি জনগণের ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্ববাসীর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি বলেছেন, এ ধরনের গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সমাজ উদাসীন থাকলে তা নৈতিকভাবে ভয়াবহ উদাহরণ হয়ে থাকবে। রোববার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে রোববার প্রেসিডেন্ট লুলা এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নিপীড়ন, নির্বিচার হত্যা এবং খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ঘটনা মানবতা বিরোধী। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান যেন তারা এই সহিংসতা প্রতিরোধে সরব হয় এবং নির্লিপ্ত না থাকে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বলেন, “ইসরায়েল গাজায় যেভাবে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে এবং মানবিক সাহায্য বন্ধ করে ক্ষুধা ছড়িয়ে দিচ্ছে, সেটিকে আমরা আর চুপচাপ মেনে নিতে পারি না। গাজায় তারা যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা বন্ধ করতে বিশ্বকে দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।”
এই মন্তব্য তিনি এমন সময় দিলেন, যখন কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে বলে জানা গেছে। হামাস জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
ব্রাজিল সরকার গাজা সংকট শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বানে নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট লুলা অতীতেও গাজার পরিস্থিতিকে “গণহত্যার মতো অপরাধ” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৪০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েল এখনো হামলা অব্যাহত রেখেছে, আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও।
এই পরিস্থিতিতে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গণহত্যার অভিযোগে মামলাও চলছে।
তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি






