অনলাইন ডেস্ক : অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর দিনের শুরুতে বাংলাদেশ হাউসে অত্র হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার চিরঞ্জীব সরকার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু করেন।

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পতাকা উত্তোলনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

পরে বিকালে শুরু হয় দিনের দ্বিতীয় কর্মসূচি। করোনা মহামারীর কারণে কানাডার ১০টি প্রদেশ ও তিনটি টেরিটরির বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অত্র মিশনের কাউন্সেলর সাখাওয়াৎ হোসেন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এরপর শুরুতেই বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে মিয়া মোঃ মাইনুল কবির, মিনিস্টার, দেওয়ান হোসনে আইয়ুব, মিনিস্টার, মোঃ শাকিল মাহমুদ, কাউন্সিলর, অর্পণা রানী পাল, কাউন্সিলর।

বাণী পাঠের পর কানাডায় বসবাসরত আমন্ত্রিত বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তাঁদের পরিচয় দিয়ে একটি উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

উক্ত উন্মুক্ত আলোচনার শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। স্বাগত বক্তব্যে তিনি প্রথমেই জাতির জনক সহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত অতিথিদের ধন্যবাদ প্রদান করে উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি সকলকে একযোগে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান।

এরপর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ তাঁদের পরিচয় দিয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বক্তব্য প্রদান করে। সকলেই একমত পোষণ করেন যে, দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন- জনাব আজিজুর রহমান প্রিন্স, জনাব আহসান হাবিব, জনাব গোলাম কিবরিয়া, জনাব ওমর সেলিম, জনাব কবির চৌধুরী, জনাব বাহাউদ্দিন শিশির, ড. নুরুল হক, মমতা দত্ত, জনাব রিয়াজুল হক, জনাব লিটন মাসুদ, জনাব ফাইজুল করিম, জনাব হাসানুজ্জামান, জনাব মুস্তাফা কামাল, জনাব আব্দুস সালাম, জনাব ডঃ শফি ভুঁইয়া, জনাব মনির হোসেন, জনাব তাজুল রিয়াদ, জনাব গোলাম মহিবুর রাহমান, জনাব শহিদুল ইসলাম, জনাব সোহেল হাওলাদার কবি আহাদ চৌধুরী, মিসেস রাশেদা নেওয়াজ, জনাব সেলিম জুবেরী, সাদেরা সুজন, জনাব মাসুদ সিদ্দিকী, জনাব এস এম এ রানা, জনাব জাকির হোসেন প্রমুখ।

পরিশেষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন নবনিযুক্ত হাইকমিশনার জনাব ড. খলিলুর রহমান। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দানকারী সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির জন্য উৎসব ও গর্বের একটি দিন। আজ এই আনন্দের দিনে সকলকে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে নিতে একযোগে কাজ করতে হবে।

তিনি মহান বিজয় দিবসে সকলে মিলে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে যার যার অবস্থান থেকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি তার বক্তৃতায় আরও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক প্রশ্নাতিতভাবে প্রমাণিত ঘৃণ্য খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায়ের সম্মুখীন করবেন। একই সাথে তিনি কানাডার মাটিতে বসে বাংলাদেশ সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদেরকে নিবৃত্ত করার বিষয়েও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, কানাডার সরকারের সাহায্য নিয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ দুটি বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য তিনি কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে নতুন হাই কমিশনার অর্থনৈতিক কূটনীতি ও জনকূটনীতি্র উপর গুরুত্ব দিয়ে আগামী চার বছরের প্রস্তাবিত কর্মকাণ্ডের রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হবারও আহবান জানান। তিনি তাদেরকে আশ্বস্ত করেন যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের যথা সময়ে সর্বোচ্চ সেবা দেবার লক্ষ্যে অটোয়া মিশন ও টরন্টো কনস্যুলেটকে “Service and Support Centre” হিসেবে গড়ে তুলা হবে।

সর্বশেষে তিনি বলেন, “জনগণের হাই কমিশনার” হিসেবে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে সাথে নিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান। তিনি নতুন হাইকমিশনার হিসাবে তাঁর আগামী চার বছরের সার্বিক রূপরেখা সবাইকে অবহিত করেন।