অটোয়ায় ‘ফ্রিডম কনভয়’ এর প্রতিবাদের একাংশ

অনলাইন ডেস্ক : গত ৬ ফেব্রুয়ারি, রবিবার অটোয়ার মেয়র জিম ওয়াটসন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিরোধী ট্রাক ড্রাইভারদের অটোয়ার কেন্দ্রে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘটনায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। অটোয়ার ওয়ালিংটন স্ট্রীট এবং পার্লামেন্ট হিলের আশেপাশের স্ট্রীটের অবস্থানরত বিক্ষোভকারীদের জ্বালানী এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যোগান বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে অটোয়ার পুলিশের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই অটোয়া মেয়র জরুরি অবস্থার ঘোষণা দেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ তারিখ থেকে রাজধানী অটোয়ায় বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ এর টিকা নেয়ার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানের প্রতিবাদী ট্রাক চালকরা জমায়েত হয়েছে। ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের এই ট্রাকের বহরের প্রতিবাদ এখন সারা দেশের এক অন্যতম প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রতিবাদের আয়োজকরা যদিও এই প্রতিবাদ সমাবেশকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাদের প্রতিবাদ অটোয়ার ডাউন টাউনের জন্য জীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তাদের প্রতিবাদের স্লোগান, ট্রাকের শব্দ এবং যত্রতত্র ট্রাক পার্ক করার ঘটনা অটোয়ার স্বাভাবিক জীবনধারাকে ব্যাপকভাবে ব্যহত করেছে। অটোয়ায় জমায়েত হওয়া বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর নামে অশ্লীল ভাষায় কথা বলার সাথে সাথে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে আসছে। সেই সাথে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তারা ওয়ার মেমোরিয়ালের ওপর নাচ করতেও তারা দ্বিধা করছে না। এমনকি তাদের ব্যানার পোস্টারে তারা জার্মান নাৎসি বাহিনীর ‘স্বস্তিকা’ চিহ্নও ব্যবহার করে আসছে। এই বিক্ষোভের জেরে রাস্তায় যানজট এবং শব্দদূষণে একদম অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে অটোয়াবাসী। রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া করোনা ভ্যাকসিনের এই নীতির পক্ষে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে আন্দোলনকারীরা এই আন্দোলনের নাম দিয়েছেন ‘ফ্রিডম কনভয়’।

গত রবিবার সকালে অটোয়ার ডাউন টাউনে যত্রতত্র গাড়ি রাখার অপরাধে প্রায় ৫০০ ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহনকে পুলিশ টিকিট দেয়। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, অটোয়ার ডাউন টাউনের বিক্ষোভকারীদের অবস্থানরত ‘রেড জোন’ এলাকায় সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। পুলিশ জানায়, প্রতিবাদকারীদের সহায়তা করার জন্য কেউ যদি বাইরে থেকে কোন কিছু সরবরাহ করার চেষ্টা করে তবে তাদেরকে গ্রেফতার করা হতে পারে।

মেয়র ওয়াটসন বলেন, প্রতিবাদের নামে ট্রাক ড্রাইভাররা যে আচরণ করছে তা মেনে নেওয়া যায় না। তারা আগুন জ্বালিয়ে, উচ্চ স্বরে সঙ্গীত বাজিয়ে এবং ঘন ঘন হর্ণ বাজিয়ে জন জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তিনি বলেন, কানাডায় সবার মত প্রকাশের অধিকার বা স্বাধীনতা আছে। সেই সাথে শান্তিপূর্ণ যে কোন বিক্ষোভ সমাবেশ যে কোন দল বা গোষ্ঠী করতেই পারে। কিন্তু ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে ট্রাক ড্রাইভাররা যা করছে তা মেনে নেওয়া কষ্টকর। অটোয়ার সাধারণ জনগণের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতেই তিনি এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকারের উর্ধ্বতন মহলের সাথে বিক্ষোভকারীদের খুব দ্রæত আলোচনা হবে এবং এ ব্যাপারে একটা সমাধানের পথ উম্মোচিত হবে। সেই সাথে অতি শীঘ্রই অটোয়াবাসী স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসবে।