অনলাইন ডেস্ক : কানাডার অন্টারিওতে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে টিকার ২য় ডোজ নেয়ার সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে ৮০ বা তদুর্ধ বয়স্কদের টিকার ২য় ডোজ দেয়া শুরু হবে। অন্যদিকে ক্যুইবেকে কারফিউ প্রত্যাহার করায় শুক্রবার রাতে মানুষজন রাস্তায় নেমে আনন্দ-উল্লাস করেছে। অন্টারিও প্রশাসন বলেছে, তারা গ্রীষ্ম শেষ হওয়ার আগেই বেশিরভাগ মানুষের ফুল ডোজ টিকা নিশ্চিত করতে চায়। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ শুরু করেছে। প্রভিন্সের স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার থেকে টিকার ২য় ডোজ দেয়া শুরু হবে।
৮০ বছরের উপর যে সব লোক ইতিমধ্যে ১ম ডোজ নিয়েছেন তাদেরকে ২য় ডোজের জন্য রেজিস্ট্রেশন করা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ডোগ ফোর্ড বলেছেন, অন্টারিওতে ১৮ বছরের ঊর্ধে যাদের বয়স তাদের ৬৫ শতাংশ ইতিমধ্যে টিকার ১ম ডোজ নিয়েছে। বিভিন্ন সোর্স থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা পেলে আগস্ট নাগাদ প্রভিন্সের সবাই ১ম ডোজ টিকা নিতে পারবে। গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। সে সময় তিনি আরো বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে ২য় ডোজ দেয়া শুরু হবে। দ্রæত সবাইকে ফুল ডোজ টিকা দিতে এই কার্যক্রমে গতি আনা হচ্ছে।
এদিকে দ্য ন্যাশনাল অ্যাডভাইসরি কমিটি অন ইমুনাইজেশন (এনসিআই) তাদের নতুন গাইড লাইনে বলেছে কানাডায় এখন টিকার পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় যত দ্রুত সম্ভব ২য় ডোজ দেয়া শুরু করা যায়। এক্ষেত্রে তারা বয়স্ক ও অসুস্থ্যদের অগ্রাধিকার দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এর আগে টিকার সরবরাহ ও মজুদ কম থাকায় এন এসি আই ১ম ডোজ নেয়ার চার মাস পর ২য় ডোজ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। এখন ফাইজার-বায়োএনটেক ও মর্ডানার ১ম ডোজ গ্রহণকারীরা ২৮ দিন পর ২য় ডোজ নিতে পারবেন বলে ওই কমিটি জানিয়েছে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রশাসন জানিয়েছে তারা দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান ১৬ সপ্তাহ থেকে কমিয়ে ৮ সপ্তাহ করার কথা ভাবছে। ম্যানিটোবাতেও দুই ডোজের ব্যবধান কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
অন্টারিওতে এখন যারা ১ম ডোজ নিচ্ছেন তারা আগস্টের শুরুতে ২য় ডোজ পাবেন বলে জানানো হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি জুন মাসের মধ্যে ১২ থেকে ১৭ বছরের সবাইকে টিকার ১ম ডোজ এবং আগষ্টের মধ্যে ২য় ডোজ দেয়া হবে। সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে কানাডার কারাগার গুলোতে এখন পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ বন্দিকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে। সাধারণ জনগণকে দেয়া টিকার হার থেকে এই হার অনেক বেশি। ফেডারেল সরকারের এক বার্তায় বলা হয়েছে, কারাগার ও সংশোধনারগুলোতে করোনা সংক্রমণ দ্রæত ছড়ানোর আশংকা থাকায় বন্দিদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হয়েছে।
ক্যুইবেকে আনন্দ উল্লাস: ক্যুবেকে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সে সময় লা ফন্টেইন পার্কে শত শত লোক জড়ো হয়ে আনন্দ-উল্লাস শুরু করে। তাদের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছিল তারা বুঝি নববর্ষ বা ওই ধরনের কোন উৎসব পালন করছে। উৎসবে যোগ দিতে আসা সাইকোলজির ছাত্র এলেক্সিস লাউজন বলেন,আমার মনে হচ্ছে দীর্ঘ দিনের বন্দিদশা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এখন আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারব।
তবে অনেকে এ ধরনের জমায়েতের সমালোচনাও করেছেন। ওল্ড পোর্ট এলাকার বাসিন্দা শিবানি বলেন, আমরা এখনো মহামারি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নই। আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ ধরণের গণ জমায়েত চলতে থাকলে করোনা আবার হানা দিতে পারে। তখন আমাদের আবার গৃহবন্দি হয়ে পড়তে হতে পারে। সূত্র : দ্য গেøাব অ্যান্ড মেইল ও রেডিও কানাডা