অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় গত ১ মাসে ১ লাখ ৫৪ হাজার নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চাইতে এই সংখ্যা অনেক বেশি। নতুন এই কর্মসংস্থানের ফলে দেশটিতে বেকারত্বের হর নেমে এসেছে ৬ শতাংশে, যা করোনা মহামারির ১৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে। অন্যদিকে বর্তমানে কানাডায় করোনা শুরুর আগের চাইতে প্রায় ২ লাখ বেশি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে বলে দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে বলা হয়েছে।

গত শুক্রবার প্রকাশিত কানাডা পরিসংখ্যান বিভাগের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বেকারত্বের হার ০.৭% কমে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। মহামারি শুরুর পর এটাই সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। করোনা শুরুর আগে ২০২০ সালের ফেব্রæয়ারিতে কানাডায় বেকারত্বের হার ছিল ৫.৭%। মহামারি শুরুর ৬ মাসের মধ্যেই ২০২০ সালের মে মাসে ওই হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৩.৭ শতাংশে। এরপর এটি ক্রমাগত বাড়তে থাকে।

ডাটা সংস্থার হিসাব অনুযায়ী গত মাসে কানাডায় ১৯.৩ মিলিয়নেরও বেশি লোক চাকুরিতে ছিল। এই সংখ্যা মহামারি শুরুর আগের সময়ের চাইতে ১ লখ ৮৩ হাজারেরও বেশি। মোট কথা কানাডার মোট কর্মঘন্টা মহামারির আগে যেখানে ছিল সেখানে ফিরে এসেছে। ডাটা সংস্থা আরো বলছে যে, কানাডায় কর্মসংস্থান এবং কর্মঘণ্টা বৃদ্ধির পাশাপাশি মজুরিও বেড়েছে। দুই বছর আগের তুলনায় বর্তমানে মজুরি প্রায় ৭.৭% বেশি। নভেম্বরে ঘন্টায় গড় মজুরি ছিল ৩০.৪০ ডলার। এটি দুই বছর আগের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২.১৮ ডলার।

এদিকে বিশ্বব্যাপী জীবন-যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব কানাডাতেও পড়েছে। পরিসংখ্যান কানাডার হিসাব অনুযায়ী দুই বছর আগের তুলনায় দেশে জীবন-যাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৫.৩ শতাংশ। এমন অবস্থায় মজুরিও কমলে ভোক্তারা দুইধারী তরবারির মুখে পড়তেন।
অ্যামপ্লয়মেন্ট ফার্ম এলএইচএইচের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা তালিয়া গুলিসন বলেন, জীবন-যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষ হন্যে হয়ে চাকুরি খুঁজছে। মূল্যস্ফীতির চাপ তাদেরকে কর্মক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনছে। গড় মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি তাদেরকে এই কঠিন সময়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগামী অর্থবছরে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীদের চাহিদা আরো বাড়বে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য বাড়তি মজুরি ও বোনাসের ব্যবস্থা রাখতে হতে পারে। এছাড়া দক্ষ কর্মীরাও বাড়তি আয়ের আশায় তাদের কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনের দিকে ঝুঁকতে পারেন।

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছিলেন, দীর্ঘমেয়াদী মহামারির জন্য দীর্ঘ মেয়াদী বেকারের সংখ্যা বাড়তে পারে। পরিসংখ্যান কানাডা বলছে, কমপক্ষে ২৭ সপ্তাহ (৬ মাস) বেকার থাকা ১৫% লোক কর্মস্থলে ফিরে এসেছে। এতে সামগ্রিক চাকুরির বাজার উন্নত হয়েছে। নভেম্বরে প্রায় ৬২ হাজার দীর্ঘমেয়াদী বেকার চাকুরি ফিরে পেয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৫৬ হাজার ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেকার ছিল। পরামর্শক সংস্থা আরএসএম কানাডার অর্থনীতিবিদ টুগুয়েন বলেন, ‘কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সাথে সাথে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। মনে হচ্ছে করোনা মহামারির অন্ধকারাচ্ছন্ন টানেলের শেষে আলো দেখা যাচ্ছে।’ সূত্র : সিবিসি