শাহনুর চৌধুরী : কানাডার ফেডারেল সরকার গত জুলাই এর শুরুতে বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে যে ঘোষণা দিয়েছিল তা থেকে সরে এসেছে। সে সময় বলা হয়েছিল ২ ডোজ করোনার টিকা গ্রহণকারীরা দেশের বাইরে গেলে ফিরে আসার পর আর বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকা লাগবে না। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তির দিকে সে সব দেশ থেকে ফিরে আসার পর ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ফুল ভ্যাকসিনেটেডদেরও এই নিয়ম মানতে হবে। ফলে জুলাইয়ের ঘোষণার পর বিদেশ ভ্রমণ যতটা সহজ ভাবা হয়েছিল এখন আর তা থাকছে না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
দ্য পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডার (পি এইচ এসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কানাডার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় গত জুলাইয়ে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন কিছু দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। কানাডাতেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তাই সরকার এখন প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছে এবং করোনার সংক্রমণ রোধে কিছু বিধি-নিষেধ পুনরায় চালু করেছে। পিএইচএসি আরো সতর্ক করে বলেছে যে, যেসব দেশে এখন সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী সেসব দেশে গিয়ে অনেকে হয়তো আকস্মিক লকডাউনের কবলে পড়তে পারেন। এতে ভ্রমণকারীরা বাড়তি বিড়ম্বনার মুখে পড়তে পারেন।
পিএইচএসির মুখপাত্র অ্যানি জেনিয়া এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, আগের সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যারা বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের উচিত নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী পরিকল্পনা পরিবর্তন করা। সাচকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ নাজিম মুহাজেরিন বলেন, আমাদের এখন খুবই সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্বে এখনো অনেক দেশ আছে যেখানে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তাই বিদেশে ভ্রমণ পরিকল্পনার আগে করোনা পরিস্থিতিকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
চলতি মাসে একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালায় যোগ দেয়ার জন্য তার মোজাম্বিকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাসকাচুয়ান এবং মোজাম্বিক দুই জায়গাতেই করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিনি সফর বাতিল করেছেন। তিনি বলেন, আমরা এখন করোনা ভাইরাসের ৪র্থ ঢেউয়ের মাঝে আছি। সাচকাচুয়ানে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে। মোজাম্বিকেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এমন অবস্থায় ফুল ভ্যাকসিনেটেড হওয়া সত্বেও এখন মোজাম্বিক সফরে যাওয়া ঠিক হবে না বলেই আমি মনে করছি। এদিকে কানাডায় অনেকে মিক্সড ডোজ টিকা (দুই কোম্পানির ২ ডোজ) নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কেননা অনেক দেশে এ ধরনের টিকা গ্রহণকারীদের ভ্রমণের অনুমতি দিচ্ছে না। এ ধরনের টিকা গ্রহণকারীদের বিভিন্ন দেশে গিয়ে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন ও করোনা টেস্টের মতো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সূত্র : সিবিসি