শাহনুর চৌধুরী : টরন্টোর স্কারবোরো পোর্ট ইউনিয়ন এলাকাজুড়ে এক বন্দুকধারীর আতঙ্কে একাধিক স্কুল তাৎক্ষনিক বন্ধ ঘোষণার পর পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি মারা গেছেন। অন্টারিও টহল পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার টরন্টোতে রাইফেলধারী এক ব্যক্তির কারণে বেশ কয়েকটি স্কুল ‘লক ডাউন’ করতে বাধ্য করার পর পুলিশের গুলিতে ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছে। লোকটির বয়স ২৭ বছর।

ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (এস আই ইউ) জানায়, ঘটনাস্থল থেকে একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।
টরন্টো পুলিশ প্রধান জেমস রামার বলেছেন, দুপুর ১ টার দিকে স্কারবোরো পোর্ট ইউনিয়ন এলাকায় বন্দুকসহ এক ব্যক্তির বিষয়ে রিপোর্ট করার জন্য অফিসারদের ডাকা হয়েছিল। পুলিশের মতে, একাধিক বাসিন্দা ৯-১-১ নম্বরে ফোন করে বন্দুকধারী সম্পর্কে জানিয়েছেন। কলকারীরা তার হাতে রাইফেল এবং পরনে সাদা টুপি ও কোর্ট ছিল বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে রামার জানান, ‘আতঙ্কের অবসান হয়েছে। অফিসারেরা বন্দুকধারীর মুখোমুখি হয়েছিল এবং তিনি মারা গেছেন।’ তবে এস আই ইউ’র তদন্তের স্বার্থে রেমার এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানান।

শুক্রবার সকালে এস আই ইউ সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে যে, ঘটনাস্থল থেকে একটি রাইফেল উদ্ধার হয়েছে, তবে পুলিশ যখন তাকে গুলি করে তখন সে অস্ত্রধারী ছিল কি না তা স্পষ্ট নয়। এস আই ইউ মুখপাত্র ক্রিস্টি ডেনেট বলেছেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে, দুইজন পুলিশ অফিসার ওই সন্দেহভাজনকে একসাথে গুলি করেছে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। ডেনেট বলেছেন, কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গুলি করতে বাধ্য হয়েছে তা নির্ণয়ের জন্য তদন্ত চলছে। তদন্তকাজে চারজন অফিসারের সাথে ৩ জন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শনিবার নিহতের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট তদন্ত দলের হাতে পৌছার কথা ছিল।

পুলিশ প্রধান জেমস রামার বলেন, লোকটি একটি রাইফেল নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনেক স্কুল তাৎক্ষণিক নোটিশে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় ছাত্র ও শিক্ষকেরা স্কুলের ভেতর আটকা পড়েন। পুলিশের তদন্ত দল এবং এস আই ইউ ঘটনাটি তদন্ত করছে বলে রামারকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে ‘নিষেধ’ করা হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, বন্দুকহাতে একজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখে উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার কারণ দুই দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটি প্রাইমারি স্কুলের শ্রেণীকক্ষে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৯ শিশু ও ২ শিক্ষকের নিহত হওয়া। স্থানীয় বাসিন্দা রডারিক ব্রেরেটন বলেন, টেক্সাসের গণহত্যার বিষয়টি মনে হতেই তিনি জরুরি নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। তিনি আরো বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ অফিসারেরা সেখানে পৌঁছে যান এবং ৫ মিনিট পরেই তিনি গুলির শব্দ শুনতে পান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্ট্রেচারে করে একজনকে পুুলিশের অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে দেখেন। পরে দুপুর ২ টার দিকে পুলিশ ঘোষণা দেয় যে, ‘জনসাধারণের জন্য আর কোন হুমকি নেই’।

পুলিশ প্রধান বলেন, সকর্ততামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঘটনার পরপরই জোসেফ হিউ সিনিয়র পাবলিক স্কুল, স্যার অলিভার মোওয়াট কলেজিয়েট ইনিস্টিটিউট, শার্লটাউন জুনিয়র পাবলিক স্কুল, সেন্টেনিয়ান রোড জুনিয়র পাবলিক স্কুল ও উইলিয়াম জি ডেভিস জুনিয়র পাবলিক স্কুল ‘লকডাউনে’ চলে যায়। এছাড়া এলাকায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। সূত্র : সিবিসি