অনলাইন ডেস্ক : কানাডার প্রাদেশিক এবং আঞ্চলিক নেতারা দেশটির জামিন ব্যবস্থার পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে চাপ দিচ্ছেন, বিশেষ করে কিছু আগ্নেয়াস্ত্র-সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে। ট্রুডোকে গত ১৩ই জানুয়ারি, শুক্রবার এক চিঠিতে ১৩ জন প্রিমিয়ার বলেছেন যে তারা একটি সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন দেখতে চান যা নিষিদ্ধ বা সীমাবদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধের সাথে সম্পর্কিত অভিযোগে অভিযুক্তদের জন্য জামিনকে আরও কঠিন করে তুলবে। তারা অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র-সম্পর্কিত অপরাধের পর্যালোচনারও আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের যারা জামিনে আছে তাদের আরও অপরাধমূলক কাজ করা থেকে বিরত রাখতে বিচার ব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য ক্রমবর্ধমান সংখ্যক কল করা হয়েছে বলে চিঠিটি উল্লেখ করা হয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে মৌলিকভাবে ওইসব লোকদের রাস্তা থেকে দূরে রাখতে হবে যারা জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

সা¤প্রতিক মাসগুলোতে জামিনের বিষয়টি আরো কঠোর ও সংস্কারের জন্য ক্রমবর্ধমান আহবান সারা দেশে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিলো। বিশেষ করে, কনস্টেবল গ্রজেগর্জ পিয়েরজচালার মৃত্যুর পর অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ কমিশনার টমাস ক্যারিক এ ব্যবস্থায় পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন।

র‌্যান্ডাল ম্যাকেঞ্জি, যিনি জামিনে ছিলেন এবং আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা হতে আজীবন নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন; এমনকি তার বিরুদ্ধে ফার্স্ট-ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিলো। সেই ম্যাকেঞ্জিকে প্রাথমিকভাবে হামলা এবং আগ্নেয়াস্ত্রের অভিযোগের সাথে জড়িত পৃথক মামলায় জামিন দিতে অস্বীকার করা হলেও আদালতের নথিগুলো দেখায় যে পর্যালোচনার পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

চিঠির উপসংহারে প্রিমিয়াররা বলেছেন, কানাডিয়ানদের জননিরাপত্তা এবং যারা এ বিষয়ে সাহসিকতার সাথে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি ঝুলে থাকতে পারে না, এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নেয়ার সময়।

প্রিমিয়াররা বিশেষভাবে ফৌজদারি কোডের ধারা ৯৫ -এর অধীনে অভিযুক্তদের জন্য একটি ‘বিপরীত ভার’ তৈরি করার আহ্বান জানান। যার মধ্যে নিষিদ্ধ বা সীমাবদ্ধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধ অন্তর্ভুক্ত। ফৌজদারি কোডের ধারা ৯৫ -এর অধীনে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দেখাতে হবে কেন বিচারের আগে তাদের আটক করা ন্যায়সঙ্গত নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, আটক কেন ন্যায্য তা দেখানোর ভার প্রসিকিউশনের ওপর বর্তায়।

চার্টারের অধীনে কানাডিয়ানদের অধিকার রয়েছে যথাযথ কারণ ছাড়া যুক্তিসঙ্গত জামিন অস্বীকার করা যাবে না। কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেন যে আরও কঠোর জামিন সংস্কারের জন্য চাপ কাঠামোগত সমস্যাগুলোর উপর গুরুত্বারোপ থেকে দৃষ্টিকে দূরে সরিয়ে দেয়।
প্রিমিয়াররা চিঠিতে ট্রæডোকে বলেছেন যে, অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র-সম্পর্কিত অপরাধের পর্যালোচনাও নিশ্চিত করার জন্য অভিযুক্তদের জামিনের ‘বিপরীত দায়ও’ আকৃষ্ট করা উচিত কিনা তা নির্ধারণ করতে।

ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক, মেটিসের আইনজীবী প্যাট্রিসিয়া বারকাসকাস গত ডিসেম্বরে সিবিসি নিউজকে বলেছিলেন, এই সমস্যাগুলো জটিল ও গভীর এবং সেই সময়ের সাথে খুব সামান্যই সম্পর্কিত যে সময়ের শুরুতে কারো কারাবাস হতে পারে, যখন তারা বিচারের জন্য অপেক্ষা করে’।

ফেডারেল কনজারভেটিভ লিডার পিয়েরে পোইলিভরে ডিসেম্বরের শেষের দিকে বলেছিলেন যে, ট্রুডোর সরকারের উচিত ‘তার ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ বেইল’’ নীতিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া। অর্থাৎ, ২০১৯ সালে লিবারেলদের পাস করা একটি আইনের ইঙ্গিত করেন পোইলিভরে; যেটি ফৌজদারি কোডে জামিনের বিধান হালনাগাদ করেছিলো।

গত ১৪ই জানুয়ারি, শনিবার বিচার মন্ত্রী ডেভিড ল্যামেটির একজন মুখপাত্র বলেছেন যে, তার কার্যালয় প্রিমিয়ারদের প্রস্তাব বিশ্লেষণ করতে সময় নিচ্ছে। ল্যামেটির যোগাযোগের পরিচালক ডেভিড টেলর উল্লেখ করেছেন যে, কানাডার জামিন ব্যবস্থা পরীক্ষা করার কাজ চলমান ছিল, নভেম্বরে একটি ফেডারেল-প্রাদেশিক বৈঠকে সিস্টেমটি পর্যালোচনা করার জন্য একটি চুক্তি করা হয়েছিল। সূত্র : সিবিসি