অনলাইন ডেস্ক : কানাডা সরকার মন্ট্রিলের একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ৮১ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা করেছে। করোনা মহামারির সময় নিম্নমানের এন-৯৫ সরবরাহ করায় তাদের বিরুদ্ধে ওই মামলা করা হয়। সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মন্ট্রিলের ট্যাঙ্গোঁ কমিউনিকেশন মার্কেটিং কোম্পানি এবং তাদের প্রতিনিধি মিশেল অক্টাওয়ের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ মিলিয়ন নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহের দায়ে ওই মামলা করা হয়। মহামরির শুরুতেই ওই কোম্পানির সাথে সরকার মাস্কসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের চুক্তি করেছিল।
গত বছর মার্চের শুরুতে কানাডায় স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই ও মাস্কের সংকট দেখা দেয়। অনেকে বাধ্য হয়ে একই মাস্ক বার বার ব্যবহার করেন। সে সময় এন-৯৫ মাস্কের ব্যাপক চাহিদা সত্তে¡ও তা সরবরাহ করা যায়নি। এই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্কের চেয়ে অধিক শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন এবং কোভিড রোগিদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য অধিক কার্যকর। কানাডা সরকার এ ধরণের উন্নত মানের ১৯০ মিলিয়ন মাস্কের চাহিদার কথা জানিয়ে গত শুক্রবার পর্যন্ত ১২০ মিলিয়ন মাস্ক পেয়েছে, এর মধ্যে সরকারিভাবে এই মাস্ক উৎপাদনের জন্য ২টি কারখানা স্থাপনের কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চে টঙ্গোঁ থেকে কেনা মাস্কের গুণগত মান ঠিক ছিল না বলে সরকারি তদন্তে দেখা গেছে। এ বিষয়ে কোম্পানিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলে জবাবে বলা হয়, তারা চীন থেকে এই মাস্ক আমদানি করেছে।
আমদানীর পর তারা দেখতে পেয়েছে ৮০% মাস্ক যথাযথ মান সম্পন্ন নয়। প্রসঙ্গত এন-৯৫ মাস্কের বিশেষত্ব হলো এগুলো বাতাসে ভাসমান ধুলাবালি ও রোগ-জীবাণুর ৯৫% রোধ করতে সক্ষম। কিন্তু চীন থেকে আনা মাস্ক মান সম্মত না হওয়ায় তা করতে পারেনি। টঙ্গোঁর জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সরকার মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামলার অর্জিতে বলা হয়, মাস্কগুলো শুধু শোষণ ক্ষমতার জন্য নয় অন্য আরো অনেক কারণে নিম্ন মানের। এগুলোর ফিতা ঠিকই নেই এমনকি নোজপিনও যথাযথভাবে লাগানো নেই। ফলে এগুলো ব্যবহারে দৃষ্টিশক্তি ব্যহত হয়।
কনজাভেটিভ পার্টির এমপি পিয়ের পল হুস টঙ্গোঁর সাথে এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, জনগণের ট্যাক্সের টাকার এমন অপচয় মেনে নেয়া যায় না। এই চুক্তির ফলে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলার জলে গেছে। আমরা এই ক্ষতির জন্য দায়িদের চিহ্নিহ্নত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি কাজের জবাবদিহিতা থাকা উচিত। তিনি টঙ্গোঁকে আগাম অর্থ পরিশোধেরও সমালোচনা করেন।
চুক্তি অনুযায়ী টঙ্গোঁ ৩ দফায় প্রায় ৪০ মিলিয়ন মাস্ক সরবরাহ করে। এর জন্য তাদেরকে ৮১ মিলিয়ন ডলার শোধ করা হয়। সরকারের পক্ষে বলা হয়, সে সময় মাস্কসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরঞ্জামের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তাদেরকে অগ্রিম অর্থ দেয়া হয়েছিল।
সরকারের অভিযোগ সম্পর্কে টঙ্গোঁর একজন কর্মকর্তা বলেন, যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই সরকার আমাদের মাস্কগুলো গ্রহণ করেছিল। এখন যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেগুলো আমরা আদালতেই জবাব দেব। সূত্র : ন্যাশনাল পোস্ট