অনলাইন ডেস্ক : প্রায় দুই বছর স্থিতিশীল থাকার পর ভারতে আবারও নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। স্বস্তির সময় পেরিয়ে হঠাৎ করে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে চিন্তা বাড়িয়েছে চিকিৎসা মহলে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন কয়েকশ’ মানুষ, আর একই সময়ে প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন।
রোববার (৮ জুন) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬৯ জন। একই সময়ে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। মূলত কেরালা, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। চলতি বছরের শুরুতে যেখানে সংক্রমণের হার ছিল খুবই কম, এখন তা দ্রুত বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং জনসমাগম বেড়ে যাওয়াই হতে পারে এই হঠাৎ বৃদ্ধির কারণ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৩৩ জনে। গত ২২ মে পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২৫৭ জন। অর্থাৎ মাত্র দুই সপ্তাহেই প্রায় ২৪ গুণ বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
কেরালায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। এরপর গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ এবং দিল্লিতে সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য। যদিও আশার কথা হলো, আক্রান্তদের বেশিরভাগই হালকা উপসর্গে ভুগছেন এবং বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
মোট মৃত্যুর দিক থেকে হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই ছয় মাসে মাত্র ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টাতেই ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে—যা গত মাসগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। এই পরিবর্তনকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় এখন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। যাদের শরীরে উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাদের করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের শেষদিকে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ ভাইরাস একসময় গোটা বিশ্বের স্বাভাবিক জীবন থামিয়ে দিয়েছিল। ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি সেই দুঃসময়ের স্মৃতি আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে। যদিও পরিস্থিতি এখনো অতটা ভয়াবহ নয়, তবুও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাস্ক ব্যবহার, এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া—এই পদক্ষেপগুলোই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। আগাম সতর্কতা ও সচেতনতাই পারে দেশটিকে আবারও বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল