Home আন্তর্জাতিক ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ

ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ

অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্নের আওতায় ইসরায়েলকে দেওয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ ও দেশটির ওপর সর্বাত্মক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এক অধিবেশনে বক্তব্যে আলবানিজ ইসরায়েলি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সরাসরি ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ হিসেবে আখ্যা দেন।

ওই অধিবেশনে তিনি তার নতুন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বিশ্লেষণ করা হয়— কিভাবে আন্তর্জাতিক করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলের দখলদারি ও উপনিবেশ স্থাপন পরিকল্পনার সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে।

প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, কীভাবে অস্ত্র প্রস্তুতকারী, প্রযুক্তি কোম্পানি, ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাতা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের সহিংসতা ও দমন–পীড়নে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। কেউ অবৈধ বসতি গঠনে সাহায্য করছে, কেউ নজরদারি প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, আবার কেউ সরাসরি ফিলিস্তিনিদের হত্যা অভিযানে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

আলবানিজ বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নিপীড়ন এখন ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা যখন দায় এড়িয়ে চলছেন, তখন করপোরেটরা এই দখলদারি ও রক্তপাত থেকে মুনাফা করছে।

প্রতিবেদনে এসব মুনাফাবাজ প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়— আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

বক্তৃতার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আছে, যারা গাজা এবং অন্যান্য অধিকৃত অঞ্চলে সহিংসতা, ধ্বংস ও হত্যাকাণ্ড থেকে লাভবান হচ্ছে।

তিনি জানান, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর প্রায় ২১ মাসে তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জে দর বেড়েছে অন্তত ২০০ শতাংশ, যা বাজারে ২২ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি যুক্ত করেছে। আর এদিকে ফিলিস্তিনিরা টিকে থাকার সংগ্রামে শোচনীয় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

আলবানিজ বলেন, একটি জাতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, আরেকটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে কারও কারও কাছে গণহত্যাও লাভজনক বাণিজ্য।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সামরিক–শিল্প খাতই তাদের অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু। দীর্ঘমেয়াদি দখলদারি ও সামরিক অভিযান দেশটিকে যুদ্ধাস্ত্র পরীক্ষার পরীক্ষাগারে পরিণত করেছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন অস্ত্রনির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে যেসব উন্নত যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করেছে, তার ফলে তারা রেকর্ড পরিমাণ লাভ করেছে। সেই অস্ত্রেই ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ফেলে দিয়েছে প্রায় ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক— যা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ছয় গুণ শক্তিশালী।

Exit mobile version