Home কানাডা খবর ই ইউ পার্লামেন্টে কঠোর সমালোচনার মুখে ট্রুডো

ই ইউ পার্লামেন্টে কঠোর সমালোচনার মুখে ট্রুডো

অনলাইন ডেস্ক : ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ই ইউ) পার্লামেন্টে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। গত মাসে ভ্যাকসিন-বিরোধী বিক্ষোভ দমনে তার কর্মকান্ড ও বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য তিনি সেখানে এমপিদের তোপের মুখে পড়েন।
স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ই ইউ পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। সে সময় পার্লামেন্টের কিছু নির্বাচিত সদস্য ট্রুডোর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছেন, ‘কানাডায় ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভ দমনে তিনি (ট্রুডো) নিজেই ‘স্বৈরশাসকের’ মতো আচরণ করেছেন। বিক্ষোভকারিদের বিরুদ্ধে সে সময় তার মন্তব্যগুলো ছিল ‘একনায়কের’ মতো। আর এখন তিনি গণতন্ত্রের কথা বলছেন।’ প্রায় এক মাস ধরে অটোয়া দখলকারিদের প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়ায় ট্রুডো ‘নাগরিক অধিকার’ লঙ্ঘন করেছেন বলে কিছু এমপি অভিযোগ করেন। তাদের এসব বক্তব্য স¤প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কানাডায় ট্রুডোর লিবারেল সরকার গত মাসে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামে ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভ দমনে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জরুরী আইন জারি করে। ওই আইনে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে বিক্ষোভ দমনে ‘অসীম’ ক্ষমতা দেয়া হয়। ভ্যাকসিন বিরোধী বিভিন্ন জোটসহ অনেকেই আইনটির কঠোর সমালোচনা করে একে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে চলতি মাসে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ই ইউ পার্লামেন্টের অধিবেসনে ট্রুডো ভাষণ দেন। তার ভাষণের শুরুতে পার্লামেন্টের বেশির ভাগ সদস্য দাঁড়িয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। এ সময় পার্লামেন্টের পাবলিক গ্যালারি ছিল পরিপূর্ণ। ট্রুডোর ভাষণের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নির্বাচিত সংসদ হিসাবে পরিচিত ই ইউর ২৭ টি দেশের ৭০৫ জন সদস্যের মধ্যে কয়েকজনকে প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ দেয়া হয়। এদের মধ্যে অনেকে ট্রুডোর ভাষণকে স্বাগত জানালেও কয়েকজন কঠোর সমালোচনা করেন। ক্রোয়েশিয়ান এমইউপি (মেম্বার অব ইরোপিয় পার্লামেন্ট) মিসলাভ কোলাকুসিচ বলেছেন, কানাডা এক সময় নাগরিক অধিকারের পক্ষে ছিল। কিন্তু এখন সেখানে ‘সবচেয়ে খারাপ ধরনের একনায়তন্ত্র’ চলছে বলে মনে হচ্ছে। ট্রুডো সেখানে প্রতিবাদ দমনের নামে মৌলিক মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ‘পদদলিত’ করেছেন। কোলাকুসিচ আরো বলেন, স¤প্রতি আমরা দেখেছি অটোয়ায় কিভাবে বিক্ষোভকারিদের পুলিশের বুটের তলায় পিষ্ট হতে হয়েছে, মহিলাদের ঘোড়ার পায়ের নিচে পদদলিত হতে হয়েছে। আমরা আরো দেখেছি জরুরি আইনের আওতায় কিভাবে নাগরিকদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে ভুক্তভোগিদের সন্তানদের শিক্ষা, পিতা-মাতার চিকিৎসা এমনকি বাড়ির বিদ্যুৎ বিল দেয়াও ব্যাহত হয়েছে।

জার্মান এমইপি ক্রিস্টিন এন্ডারসন বলেছেন, ‘মিস্টার ট্রুডো, আপনি গণতন্ত্রের জন্য অযোগ্য। গণতন্ত্রের পক্ষে আপনার বক্তব্য যে কোন গণতন্ত্রের জন্য অপমানজনক। আপনি ট্রাকার কনভয় বিক্ষোভের সময় যে ‘সন্ত্রাসী’ আচরণ করেছেন তা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের চেয়েও বেশি। তাই আপনাকে শুধু স্বৈরশাসক বললে কম বলা হবে। আপনি তার চেয়েও বেশি কিছু। অপর জার্মান এমইপি বার্নার্ড জিমনিওক ট্রুডোকে কানাডায় ‘গণতান্ত্রিক অধিকার পদদলিত’ করার দায়ে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন পক্ষ থেকে বারবার বিক্ষোভকারিদের সাথে আলোচনার আহবান জানানো সত্বেও ট্রুডো তাতে সাড়া দেননি। মানুষের প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকারকে তিনি ‘অগণতান্ত্রিক’ পন্থায় দমন করেছেন। তার আচরণ ছিল একনায়কের মতো। সূত্র : সিবিসি

Exit mobile version