Home লিড নিউজ খাদ্যরসিক রবীন্দ্রনাথ

খাদ্যরসিক রবীন্দ্রনাথ

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>রজত কান্তি রায় &colon;<&sol;strong> রবীন্দ্রনাথের নামের সঙ্গে &OpenCurlyQuote;খাদ্যরসিক’ শব্দটি বেশ ভালো যায়। খাবার যে একটা রসের ব্যাপার&comma; উপভোগ করার ব্যাপার সেটা তিনি ভালোই বুঝতেন। শুধু নিজে খাওয়া নয়&comma; অন্যকে খাওয়ানো&comma; খাবার পরিবেশেনে চমৎকারিত্ব&comma; খাবার নিয়ে নতুন নতুন ভাবনা ইত্যাদি ব্যাপার খাদ্যরসিক না হলে ঠিক জমানো যায় না।<&sol;p>&NewLine;<p>কোনটা রবীন্দ্রনাথের প্রিয় খাবার আর কোনটা নয়&comma; সে ব্যাপারে বিস্তর বাদানুবাদ আছে। তাঁকে যে যখন যা খেতে দেখেছেন&comma; তিনি সেটাকেই রবীন্দ্রনাথের প্রিয় খাবার বলে লিখেছেন। কিন্তু আদতে রবীন্দ্রনাথ কোন খাবারটি পছন্দ করতেন&comma; সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। তবে রবীন্দ্রনাথ যে খাবারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন&comma; তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে&comma; অন্যদের লেখায় তার স্পষ্ট বিবরণ পাওয়া যায়।<&sol;p>&NewLine;<p>কিন্তু হ্যাঁ&comma; মির্জা গালিবের মতো রবীন্দ্রনাথও যে আম খেতে পছন্দ করতেন&comma; সেটা ঠিক। তিনি জাপান যাওয়ার সময় আম সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। পুত্র রথীন্দ্রনাথ লিখেছেন&comma; একবার অসুস্থ হয়ে আমেরিকা যাওয়ার সময় মুম্বাই বন্দর থেকে এক বাক্স আলফানসো আম কিনেছিলেন তাঁরা। রবীন্দ্রনাথের সেই ছেলেবেলার কবিতায়ও কিন্তু আমের কথাই আছে&comma; &OpenCurlyQuote;আমসত্ত্ব দুধে ফেলি…।’ মোদ্দাকথা আম ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ফল। কিন্তু তা ছাড়া&quest; পছন্দের খানাপিনার কথা বাদ রাখি&comma; সেটাই ভালো। তার চেয়ে বরং ভোজনবিলাসী রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কিছু কথা বলা যাক।<&sol;p>&NewLine;<p>লেখক বনফুল বিহারের ভাগলপুর থেকে সপরিবার গেছেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করতে&comma; শান্তিনিকেতনে কোনো এক বসন্ত উৎসবের সময়। সঙ্গে নিয়ে গেছেন স্ত্রীর হাতে বানানো বাড়ির গরুর দুধে তৈরি সন্দেশ। পরদিন সকালে যখন দেখা হলো রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে&comma; তখন প্রণাম-সম্ভাষণ সেরে চা খাওয়ার পালা। রবীন্দ্রনাথ বনফুলের হাতের সন্দেশের কৌটা দেখে বললেন&comma; এটি কী&quest; বনফুল জানালেন&comma; সন্দেশ। তিনি কৌটাটি খুলে রবীন্দ্রনাথের সামনে রাখলেন। কবিগুরু একটি সন্দেশ মুখে দিয়ে বিমোহিত হয়ে গেলেন।<&sol;p>&NewLine;<p>ক্ষিতিমোহনবাবুর দিকে তাকিয়ে রবীন্দ্রনাথ বললেন&comma; &OpenCurlyQuote;এ তো বড় চিন্তার কারণ হল।’<&sol;p>&NewLine;<p>&OpenCurlyQuote;কেন&quest;’<&sol;p>&NewLine;<p>রবীন্দ্রনাথ সন্দেশ খেতে খেতে বললেন&comma; &OpenCurlyQuote;বাংলাদেশে তো দুটি মাত্র রস-স্রষ্টা আছে। প্রথম দ্বারিক&comma; দ্বিতীয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এ যে তৃতীয় লোকের আবির্ভাব হল দেখছি।’<&sol;p>&NewLine;<p>জিবে দিয়েই উত্তম ছানায় বানানো সুমিষ্ট সন্দেশ চেনা কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। চোখ&comma; জিব&comma; নাক ও মস্তিষ্কের যৌথক্রিয়া সমানুপাতিক হারে না হলে এভাবে বলতে পারা যায় না। খাবারের বেলায় বাঙালিদের বেশির ভাগেরই চলে চোখ আর জিব। নাক আর মস্তিষ্ক চলে খুব কম মানুষের। তারও চেয়ে কম মানুষের এই চারটি অঙ্গ একই সঙ্গে চলে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন সেই বিরল মানুষদের মধ্যে অন্যতম।<&sol;p>&NewLine;<p>কেন বলছি&quest; সেই একই সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্রনাথ বনফুলকে বিকেলে দেখা করতে বললেন। রবীন্দ্রনাথ বনফুলকে বলছেন&comma; &OpenCurlyQuote;যাই হোক&comma; বিকেলে কিন্তু চা খাবে। তোমার লেখা পড়ে মনে হয় তুমি ঝাল খেতে ভালোবাস। বিকেলে বড় বড় কাবলে মটরের ঘুগনি করলে কেমন হয়&quest; ঘুগনির মাঝখানে একটা লাল লঙ্কা গোঁজা থাকবে। কী বল&quest;’<&sol;p>&NewLine;<p>বসন্তকালে বীরভূমের শালবনের রঙিন প্রকৃতি&comma; বসন্ত উৎসবের বিকেল&comma; সেই সময় বড় বড় কাবলি মটরের ঘুগনি। তার মধ্যে একটা লাল মরিচ বা লঙ্কা গোঁজা&comma; সঙ্গে গরম চা&excl; বনফুলের মতো একজন রসজ্ঞের সম্মতি না জানানোর কোনো কারণ নেই। &OpenCurlyQuote;বেশ তো’ বলে সায় দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের এই সূক্ষ্ম রসবোধ বিষয়ে কী বলবেন&quest; বনফুলের লেখা পড়েই কি তিনি ধরে নিয়েছিলেন যে বনফুল ঝাল খেতে পছন্দ করেন&excl; লেখার সঙ্গে ঝালের সম্পর্কইবা কী&quest; লেখার সঙ্গে ঝালের সম্পর্ক সরাসরি না থাকলেও&comma; সম্পর্ক একটা আছে। বনফুল কোথাও না কোথাও রবীন্দ্রনাথের সমালোচনা করেছিলেন। সেটা তাঁর নজরে পড়েছিল। সেদিনই তিনি বনফুলকে বলেছিলেন&comma; &OpenCurlyQuote;&&num;8230&semi;তোমার নাম হওয়া উচিত ছিলো &OpenCurlyDoubleQuote;বিছুটি”। যা দু–এক ঘা দিয়েছো তার জ্বলুনি এখনও কমেনি।”<&sol;p>&NewLine;<p>রবীন্দ্রসাহিত্যে কিংবা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন লেখকের স্মৃতিকথায়&comma; জীবনীতে তাঁর খানাপিনা নিয়ে ভাবনার অনেক কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু খুব কম জায়গায় পাওয়া যায় তাঁর খাদ্যদর্শন। হ্যাঁ&comma; দর্শনই বটে। খাদ্য ব্যাপারটার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটা বিস্তৃত সংস্কৃতি। কেউ তাকে বলে সংস্কার&comma; কেউ বলে বিশ্বাস&comma; কেউ বলে দর্শন। খাবার নিয়ে প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব দর্শন আছে। রবীন্দ্রনাথেরও ছিল।<&sol;p>&NewLine;<p>বনফুলের লেখা থেকে জানা যায়&comma; রবীন্দ্রনাথ খেতে এবং খাওয়াতে ভালোবাসতেন। পুত্র রথীন্দ্রনাথও সে কথা লিখেছেন। ইন্দিরা দেবীও মোটামুটি কাছাকাছি কথাই লিখেছেন। আরও অন্যরাও তেমনই লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে। তবে তাঁর খাদ্যদর্শনটি ধরতে পেরেছিলেন সম্ভবত রথীন্দ্রনাথই। পুত্র বলে তিনি খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন বাবা রবীন্দ্রনাথকে। পছন্দ–অপছন্দ যেমন জানতেন&comma; তেমনি জানতেন খাবার বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব চিন্তার জগৎটা কী।<&sol;p>&NewLine;<p>রবীন্দ্রনাথের খামখেয়ালি সভার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। এর সভ্যরা প্রতি মাসে নিজেদের বাড়িতে সভার আয়োজন করতেন পালাক্রমে। সেখানে গান হতো&comma; কবিতা হতো&comma; অভিনয় হতো। প্রচুর আড্ডা হতো এবং অবশ্যই খাওয়াদাওয়া হতো। বেশ কয়েকবারই রবীন্দ্রনাথের পালা পড়েছিল নিজের বাড়িতে আড্ডা বসানোর। তিনি নিজের সাধ্য এবং রুচিমতো সেটা পালনও করেছিলেন। সম্ভবত যেবার প্রথম রবীন্দ্রনাথের পালা পড়েছিল খামখেয়ালি সভা আয়োজনের&comma; সে সময়ের কথা বলেছেন রথীন্দ্রনাথ।<&sol;p>&NewLine;<p>রথীন্দ্রনাথ বলেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;বাবার যেবার নিমন্ত্রণ করার পালা পড়ল&comma; বাড়িতে হুলুস্থুল পড়ে গেল। মাকে ফরমাশ দিলেন খাওয়ানোর সম্পূর্ণ নতুন রকম ব্যবস্থা করতে হবে। মামুলি কিছুই থাকবে না&comma; প্রত্যেকটি পদের বৈশিষ্ট্য থাকা চাই। ফরমাশ করেই নিশ্চিন্ত হলেন না&comma; নতুন ধরনের রান্না কী করে রাঁধতে হবে তাও বলে দিতে লাগলেন।’ এই আয়োজনের সূত্রেই রথীন্দ্রনাথ তাঁর বাবার খাদ্যদর্শন জানিয়ে দিয়েছেন।<&sol;p>&NewLine;<p>তিনি লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;বাবা মনে করতেন খাওয়াটা উপলক্ষ মাত্র&comma; রান্না ভালো হলেই হল না—খাবার পাত্র&comma; পরিবেশনের প্রণালী&comma; ঘর সাজানো&comma; সবই সুন্দর হওয়া চাই। যেখানে খাওয়ানো হবে তার পরিবেশে শিল্পীর হাতের পরিচয় থাকা চাই। মা রান্নার কথা ভাবতে লাগলেন&comma; অন্যরা সাজানোর দিকে মন দিলেন।’<&sol;p>&NewLine;<p>এ আয়োজনের জন্য জয়পুরের শ্বেতপাথরের বাসন আনানো হয়েছিল। ভাবা হয়েছিল মাটিতে বসে খাওয়া হবে কিন্তু খাবার রাখার জন্য প্রত্যেকের সামনে শ্বেতপাথরের একটি করে জলচৌকি থাকবে। অনেকগুলো পাথরের জলচৌকি তৈরি করা হয়েছিল। আর খাবারের জায়গা সাজানো হয়েছিল কেমন করে&quest;<&sol;p>&NewLine;<p>রথীন্দ্রনাথের জবানীতেই শোনা যাক&comma; &OpenCurlyQuote;জলচৌকি চতুষ্কোণভাবে সাজিয়ে মাঝখানে যে জায়গা রইল&comma; তাতে বাংলাদেশের একটি গ্রামের বাড়ি বানানো হল। বাঁশবন&comma; শ্যাওলাপড়া ডোবা&comma; খড়ের ঘর কিছুই বাদ গেল না&comma; ছবির মত সম্পূর্ণ একটি গ্রাম। কৃষ্ণনগর থেকে কারিগর আনিয়ে খড়ের ঘর&comma; ছোট ছোট মানুষ&comma; গোরু&comma; ছাগল বানিয়ে সাজিয়ে দেওয়া হল। এই সুন্দর পরিবেশে নৈশভোজন যে উপভোগ্য হয়েছিল&comma; বলা বাহুল্য।’<&sol;p>&NewLine;<p>প্রায় কাছাকাছি একটি বর্ণনা দিয়েছেন বনফুল। সেই যে বেশি করে লঙ্কা দিয়ে ঘুগনি খাওয়ার সময় যেদিন&comma; সেদিন মূলত রবীন্দ্রনাথ আনুষ্ঠানিকভাবে বনফুলের পরিবারকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। উত্তরায়ণের একটি বারান্দাকে পর্দা দিয়ে ঘিরে খাবারের আয়োজন। অদ্ভুত সে আয়োজনের বর্ণনা দিয়েছেন বনফুল।<&sol;p>&NewLine;<p>লিখেছেন&comma; &OpenCurlyQuote;আমাদের পাঁচজনের জন্য পাঁচটি টেবিল। তাতে থরে থরে নানারকম খাবার সাজানো।… টেবিলগুলো অদ্ভুত। প্রত্যেক টেবিলে তিনটি কি চারটি থাক &lpar;ঠিক মনে নেই&rpar;&comma; তার প্রত্যেক থাকেই খাদ্য এবং পানীয়। উপরের থাকের খাবার খাওয়া হয়ে গেলে হাত দিয়ে একটু ঠেললেই সেটা সরে যাবে&comma; বেরিয়ে পড়বে খাবারসুদ্ধ দ্বিতীয় থালাটা।’<&sol;p>&NewLine;<p>বনফুল জানাচ্ছেন&comma; তাঁদের প্রত্যেকের পেছনে এমনকি তাঁর এক দেড় বছরের ছেলের বসার আসনের পেছনেও দাঁড়িয়েছিলেন একজন করে তত্ত্বাবধায়ক। খাবার নিশ্চয়ই ভালো ছিল। কিন্তু খাবার নিয়ে এই যে আয়োজন&comma; সেটাই ছিল রবীন্দ্রনাথের খাদ্যদর্শন। কোথাও পাওয়া যায় না&comma; রবীন্দ্রনাথ খাবার নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন। খাবার খাওয়ানোয় আভিজাত্য ছিল&comma; খাদ্য পরিবেশনে চমৎকারিত্ব ছিল কিন্তু &OpenCurlyQuote;অনেক খাওয়ালাম’ ধরনের বড়াই পাওয়া যায় না। বরং বনফুলই শুধু নন&comma; আরও অনেকেই লিখেছেন&comma; খাওয়াতে পারলে তিনি তৃপ্তি পেতেন।<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version