Home কানাডা খবর তামাক কোম্পানির সাথে সম্পর্কের কারণে কানাডায় মেডিকাগোর টিকার অনুমোদন দিচ্ছে না হু

তামাক কোম্পানির সাথে সম্পর্কের কারণে কানাডায় মেডিকাগোর টিকার অনুমোদন দিচ্ছে না হু

অনলাইন ডেস্ক : শীর্ষ স্থানীয় তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনালের সাথে যোগসূত্র থাকায় কানাডায় ‘মেডিকাগো কোভিড-১৯’ ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিচ্ছে না বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা ওয়াল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউ এইচ ও )। সমালোচকেরা বলছেন, এই ঝুঁকির বিষয়টি আগে থেকেই সরকারের জানা উচিত ছিল। মেডিকাগোর সাথে ফিলিপ মরিসের মালিকানার বিষয়ে সরকারকে আগেই সতর্ক করা সত্বেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি বলে অনেকে এখন অভিযোগ করছেন। তারা বলছেন, সরকারের অসচেতনায় দেশে মেডিকাগোর ভবিষ্যত অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত ২৫ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হু (ডব্লিউ এইচ ও) জানায়, তামাক শিল্পের সাথে যোগসূত্র থাকায় মেডিকাগোর ‘কোভিফেঞ্জ’ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। বায়োফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম ওই অনুমোদনের অনুরোধ করেছিল। তাদের অনুরোধ এখন ‘স্থগিত’ করা আছে। এই টিকার জন্য কোম্পানিতে করদাতাদের কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। হু এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেডিকাগোর ২১ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিশ্বখ্যাত মার্লবোরো সিগারেটের প্রস্তুতকারক ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনাল। আর তামাকের বিরুদ্ধে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরেই ‘কঠোর নীতি’ অবলম্বন করে আসছে। তাই মেডিকাগোকে এই বিষয়ে আগেই অবহিত ও সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ফেডারেল সরকার ২০২০ সালে কোম্পানিটিকে ভ্যাকসিন তৈরির অনুমোদন দেয় এবং তাদের কাছ থেকে প্রথমে ৫৬ মিলিয়ন ডোজ কেনার চুক্তি করে। পরে অতিরিক্ত আরো ২০ মিলিয়ন ডোজ কেনার জন্য মোট ১৭৩ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে। সরকার কানাডায় এই ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দিয়েছে এবং আগামী মাসে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এটি বিতরণ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু হু’র নিষেধাজ্ঞায় এখন এই টিকার অনুমোদন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

কুইবেক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইএনএসপিকিউ) এর মেডিক্যাল এপিডেমিওলজিস্ট ডা: গ্যাস্টন ডি সেরেস বলেছেন, মেডিকাগোকে এখন তাদের অপরিনামদর্শীতার পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। এটি এমন কোন বিষয় নয় যা তারা উপেক্ষা করেছে। হু-এর সাথে কাজ করার প্রভাব ও সমস্যার বিষয়গুলো বিবেচনা করেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জানত যে ডবিøউ এইচ ও’র সাথে কাজ করা তাদের জন্য কঠিন হবে।

ডি সেরেস বলেন, তামাক শিল্পের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলে কোভিড ভ্যাকসিনের অনুমোদন পাওয়া নিয়ে সৃষ্ট সমস্যাগুলো ছিল ‘খুবই স্পষ্ট’। তাই বিনিয়োগের আগে ফেডারেল সরকারের বিষয়টি ভাবা উচিত ছিল। তাহলে করদাতাদের কষ্টার্জিত উপার্জনের অর্থ এভাবে ঝুঁকির মুখে পড়ত না। এছাড়া ফিলিপ মরিস যে এই কোম্পানির একজন গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার হোল্ডার এটা জানতে কাউকে ‘কঠোর পরিশ্রম’ করার কথা না।
ডবিøউ এইচ ও মনে করে অকাল মৃত্যুর সবচেয়ে বড় প্রতিরোধযোগ্য কারণ হচ্ছে তামাক। তাদের এই মতের সাথে প্রায় সবাই একমত। তাই তামাক শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য কিছুই করতে সম্মত নয় হু। মেডিকাগোর তৈরি ভ্যাকসিনটিতে তামাকজাত উদ্ভিদ থেকে পাওয়া নিকোটিয়ানা বেনথামিয়ানা উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে এটি সংক্রমক ভাইরাসের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর। কিন্তু নিকোটিনের সাথে সিগারেটের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এটি সবারই জানা। তাই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমোদন দিচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে করোনা মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বে ৬ মিলিয়নেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে তামাক ও তামাকজাত পন্য ব্যবহারে বিশ্বে প্রতিবছর ৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যায়। সূত্র : সিবিসি

Exit mobile version