অনলাইন ডেস্ক : গত ১০ই ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার সন্ধ্যায় টরন্টোর সিটি হলে এক প্রেস কনফারেন্সে সাবেক সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন টানা তিন বার টরন্টোর মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী ৬৮ বছরের জন টরি। ‘টরন্টো স্টার’ সংবাদপত্রে ৩১ বছর বয়সী নারী সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কের তথ্য দিয়ে একটি অনুসন্ধিৎসু প্রতিবেদন প্রকাশ হবার পর পরই তিনি হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তবে ওই প্রতিবেদনে মেয়রের সাবেক সহকর্মীর নাম ও বর্তমান কর্মস্থল উল্লেখ করা হয়নি।
পদত্যাগ ঘোষণার সময় জন টরি বলেন, করোনা মহামারীর সময় তাঁদের সম্পর্কের শুরু এবং এ বছরের শুরুতে উভয়ের সম্মতিতে তা শেষও হয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, টরন্টোর মানুষজনসহ যারা আমার আচরণে কষ্ট পেয়েছেন আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। বিশেষ করে আমি আমার স্ত্রী বার্বকে সবার কাছে ছোট করেছি, আমি তাঁর কাছে এবং আমার পরিবারের লোকজনের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
টরন্টোর মানুষের কাছে বিপুল জনপ্রিয় জন টরি আরও বলেন, ‘আমি গভীরভাবে অনুশোচনা করছি, টরন্টো এমন একটি শহর যাকে আমি খুব ভালোবাসি এবং আমাকে এ শহরের ভালোর জন্য যে কাজের সুযোগ টরন্টোবাসী দিয়েছিল, সেখান থেকে আমাকে সরে যেতে হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, তিনি নির্বাচনে ডগ ফোর্ড ও অলিভিয়া চো’কে পরাজিত করে ২০১৪ সালে মেয়র হন। তারপর ২০১৮ ও ২০২২ সালে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বারের মত টরন্টোর মেয়র নির্বাচিত হন। এবারের মেয়াদ শেষ করতে পারলে তিনি হতেন টরন্টোর ইতিহাসে দীর্ঘ সময়ের মেয়র।
পদত্যাগ ঘোষণার সময় জন টরি জানান, তাঁর দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে হস্তান্তরের জন্য তিনি সিটি ম্যানেজার, সিটি ক্লার্ক এবং ডেপুটি মেয়র জেনিফার ম্যাককেলভির সাথে কাজ করবেন। তিনি সে সময়, এটাও উল্লেখ করেন, তিনি ইতিমধ্যে ‘ইন্টেগ্রিটি কমিশনার’কে এই সম্পর্কটি পর্যালোচনা করার জন্য বলেছেন।
‘সিটি অব টরন্টো এক্ট’ অনুযায়ী, উপ নির্বাচন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এখন টরন্টোর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি মেয়র জেনিফার ম্যাককেলভি। পেশাগত জীবনে একজন জিওসাইন্টিস জেনিফার স্ক্যারবরো-রুজ পার্ক (ওয়ার্ড ২৫) এর একজন কাউন্সিলর। মেয়র পদ শূন্য হলে তাঁকে আগামী কয়েক মাস এ দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ট এ বলা আছে, মেয়র পদের শূন্যতা ঘোষণার পর উপ নির্বাচনের তারিখ এমনভাবে ধার্য করতে হবে যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা কম করে ৩০ দিন এবং উর্ধ্বে ৬০ দিন সময় পান।
জন টরির পদত্যাগের ঘোষণা টরন্টোবাসীকে বিস্মিত করেছে। তাঁর প্রায় এক দশকের মেয়র থাকা কালে টরন্টোর বেশ কিছু বড় বড় প্রকল্প নেয়া হয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়িত হলে টরন্টোর জন জীবনে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। হঠাৎ করে তাঁর অনুপস্থিতি সেই সব প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হতে পারে অনেকে মনে করেন। সেই সাথে তাঁর মত একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ জন প্রতিনিধির অভাব টরন্টোবাসী অনুভব করবে।