Home কানাডা খবর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় কানাডা ডে উদযাপন

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় কানাডা ডে উদযাপন

আহসান রাজীব বুলবুল, কানাডা : বিপুল উৎসাহ আর উদ্দীপনায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) উদযাপন করা হলো কানাডার ১৫৪তম জন্মদিন। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ দিনটি উদযাপন করা হয়। আর এ উদযাপনের সঙ্গে যুক্ত হন প্রবাসী বাঙালিরাও।

আয়তনের দিক থেকে কানাডা ৯ হাজার ৯৮৫ মিলিয়ন কিলোমিটার হলেও জনসংখ্যা মাত্র ৩৬ মিলিয়ন। দেশটির রয়েছে ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটোরিজ।

কানাডার ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী পাড়ি দেন কানাডায়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কানাডার বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসা যোগাযোগব্যবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে দেশ হিসেবে বিশ্বের সবার কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

১৯৭১ সালে কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয় মাল্টিকালচারিজমের, যার মূলমন্ত্র হলো সব নাগরিকের থাকবে সমান অধিকার ও দায়িত্ব। যার ফলে দেশটির জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত ১৭ মিলিয়নের বেশি লোক অভিবাসী হয়ে দেশটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। কানাডা শান্তি রক্ষায় সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কানাডা ডের কেক কাটা, ফায়ারওয়ার্কস, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা।

দিবসটি উপলক্ষে কানাডার ক্যালগেরির স্থানীয় জেনেসিস সেন্টার, প্রেইরি উন্ডসপার্ক, রকিভিউ অ্যালায়েন্স, ডাউন টাউনসহ ক্যালগ্যারির বিভিন্ন স্থানে প্রত্যেক বছর বিপুল পরিমাণ মানুষের সমাগম ঘটে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে গতবছর কানাডার কোনো প্রভিন্সেই কানাডা ডে উদযাপিত হয়নি। আলবার্টায় চলতি বছর ১ জুলাই থেকে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখানে ইতোমধ্যেই ৭০ শতাংশ নাগরিককে টিকা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কানাডার জনস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, টিকার দুই ডোজ গ্রহণকারীরা এখন আলিঙ্গন করতে পারবে।

দিবসটি উপলক্ষে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং আলবার্টা প্রিমিয়ার জেসন কেনী পৃথক শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।

ক্যালগেরির এ বি এম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ড. মো. বাতেন বলেন, দূর প্রবাসে থাকলেও মাতৃভূমি আমাদের হৃদয়ে, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা আমাদের আশার আলো দেখায়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম রোল মডেল। কানাডার জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা প্রচুরসংখ্যক বাঙালি এ দেশে আসুক, জ্ঞানার্জন এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখুক।

বিশিষ্ট কলামিস্ট উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান বলেন, সাম্যভিত্তিক অর্থনীতির উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক কানাডার ১৫৪তম জন্ম দিবসে একজন বাংলাদেশি-কানাডিয়ান হিসেবে আনন্দিত। কোভিড-১৯ এর ভয়াবহ বিপর্যয় কাটিয়ে জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বে দ্রুত গতিতে সুদিনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কানাডা। আগামী দিনে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশি পেশাজীবীদের আরও ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনীতিই সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাক; এটিই আজকের প্রত্যাশা।

কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ইকবাল রহমান বলেন, আমরা আনন্দিত যে কানাডায় বসে কানাডার ১৫৪তম জন্মদিনে উদযাপন করছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আরও প্রচুরসংখ্যক বাংলাদেশি এ দেশে এসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করুক, এমনটাই কামনা করছি।

কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী কিরন বণিক শংকর বলেন, বিশ্ববাসী আজ বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রবাসী হয়েও আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে গর্ব করি, অহংকার করি। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও কানাডা মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। কানাডার ১৫৪তম জন্মদিনে এটাই আমার প্রত্যাশা।

কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও সিলেট অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি রূপক দত্ত বলেন, বাংলাদেশ যেমন আমাদের অহংকার পাশাপাশি কানাডাও আমাদের কাছে অহংকার। কানাডার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যেসব দেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল তাদের মধ্য অন্যতম কানাডা। সেই কানাডার জন্মদিনে ব্যাপক সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রবাসী বাঙালিদের।

উল্লেখ্য, ‘কানাডা ডে’ কানাডার জাতীয় এবং সবচেয়ে বড় বার্ষিক উৎসব। ১৮৬৭ সালের ১ জুলাই তৎকালীন কানাডার তিনটি কলোনি একত্রিত হয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে অখণ্ড কানাডার বর্তমান রূপ ধারণ করে। প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কানাডাসহ সারাবিশ্বে দিবসটি উদযাপন করে কানাডার অধিবাসীরা।

Exit mobile version