অনলাইন ডেস্ক : বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গত ১৬ই এপ্রিল, শনিবার দুপুরে টরন্টোর ড্যানফোর্থের বাঙালি পাড়ায় এক মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রার দু’দিন আগে নতুন বাংলা বছর ১৪২৯ শুরু হলেও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অধিক সংখ্যক মানুষের উপস্থিতির কারণে শনিবারকে মঙ্গল শোভাযাত্রার দিন হিসেবে বেছে নেয়া হয়। বাংলাদেশ কানাডা হিন্দু কালচারাল সোসাইটির আয়োজনে এই মঙ্গল শোভাযাত্রায় টরন্টোর বিভিন্ন সংগঠন এবং ধর্ম ও বর্ণের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। উৎসবমুখর এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা ৩০০০ ড্যানফোর্থ এলাকার বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে নতুন বছরের বিভিন্ন ধরনের রঙিন ব্যানার, ছবি এবং ফেস্টুন নিয়ে প্রদক্ষিণ করে। এই শোভাযাত্রায় ছোট বড় এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছে, গান গেয়েছে, নেচেছে এবং হাসির ফোয়ারাতে ভেসেছে। সেই সাথে বাঙালি হবার গর্বে বুক ফুলেছে সবার একই সাথে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ কাল ধরে বাংলা বছরের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনটি বাঙালিরা বিশাল এক আনন্দঘন উৎসবের মাধ্যমে পালন করে থাকে। বাঙালি সংস্কৃতিকে মনে প্রাণে ধারণ করা মানুষের কাছে কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হচ্ছে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। অতীতের ভুলভ্রান্তি, ব্যর্থতা, গ্লানি ঝেড়ে ফেলে নতুনকে আহবান জানিয়ে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় এই নববর্ষ। অধিকাংশ ঐতিহাসিকের মতে, ১৫৫৬ সালে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সালের প্রবর্তন করেন। সেই সময়ের হিজরী সালের সময় ধরে ফসল এবং খাজনা নেয়া সুবিধার্থে সম্রাট আকবর এই সৌর বছর চালু করেন। তখন বাংলার কৃষকেরা চৈত্রমাসের শেষ দিন পর্যন্ত জমিদার, তালুকদার এবং অন্যান্য ভূ-স্বামীদের খাজনা পরিশোধ করতো এবং পরের দিন বৈশাখের প্রথম দিন ভূ-স্বামীরা তাদের প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতো। আর এই উপলক্ষে মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এই প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে এবং ধীরে ধীরে পহেলা বৈশাখ আমাদের বাঙালির সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে গেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাঙালিরা রঙ্গিন পোশাকে সজ্জিত হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে থাকে।