মুন্সী বশীর : সাংবাদিক একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রকৃষ্ট পেশা, একজন সাংবাদিকের অবিকৃত খাঁটি সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে একটি পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতি ও গণমানুষ প্রবলভাবে হিতসাধন বা অনুগৃহীত হতে সক্ষম। আবার একজন সাংবাদিকের মিথ্যা ও ভ্রমাত্মক সংবাদের কারণে কোন ব্যক্তি, রাষ্ট্র ও মানবজাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর সে জন্য সাংবাদিক পেশাকে অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও সর্বোকৃষ্ট পেশা হিসেবে গণ্য করা হয়।
সাংবাদিক সাধারণত দুই শ্রেণীর :
(১) বাস্তবিক ও সত্যবাদী সাংবাদিক
(২) অবাস্তব ও মিথ্যবাদী সাংবাদিক

বাস্তবিক বা সত্যবাদী সংবাদিক : যে ধরনের সাংবাদিকবৃন্দ স্বীয় স্বার্থ ত্যাগ করে সমাজ, রাষ্ট্র ও গণমানুষের কল্যাণে নির্ভুল ও বাস্তব জগতে যা ঘটে তার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে কেবল সত্তাযুক্ত যোজনার সত্যসন্ধান দিতে সক্ষম তাকে বলা হয় সত্যবাদী ও বাস্তবিক সাংবাদিক। এইরকম বাস্তব সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকদের প্রতি জনতার ভক্তি ও আস্থা সৃষ্টি হয়।

মিথ্যা ও অবাস্তববাদী সাংবাদিক : যে সমস্ত সাংবাদিকরা অসত্য, অবাস্তব, অস্তিত্বহীন ইত্যাদি অনৈসর্গিক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে দুর্দৈব অদ্ভুত করে এবং জনগণের মধ্যে ফ্যাসাদ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তারা হচ্ছেন অবান্তর ও অসত সাংবাদিক। এধরনের সাংবাদিকরা মহাঅভিশপ্ত তাদের প্রবৃত্তি ও স্পৃহা থাকা সত্ত্বেও মানবসম্প্রদায়ের কোন জাতিকে উত্তম কিছু দিতে তারা অক্ষম। নোংরা ভাব বা অস্বাভাবিক আচরণের নিমিত্তে তারা অবজ্ঞার যোগ্য এবং এ ধরনের সাংবাদিকদের প্রতি জনসাধারণের অপ্রবৃত্তি ও অবিশ্বাস জন্ম হয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও অভিনেত্রী পরীমণি- উক্ত দুটি ঘটনার উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দেখা যায় যে, এক শ্রেণীর সংবেদনশীল সাংবাদিকের মিথ্যা ও অস্বাভাবিক রুপপ্রাপ্ত সংবাদের কারণে বাংলাদেশের সংসদসহ সমগ্র দেশ ও জাতির উপর মারাত্মকভাবে পারিপার্শ্বিক বিভ্রান্তকর দশার সৃষ্টি হয়েছে এবং এর জন্য অবশ্যই এক শ্রেণীর অপভ্রষ্ট সাংবাদিক দায়ী। আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান তার পারিবারিক কারণে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছিলেন কিন্তু ভেজাল ও অসত্য সংবাদ প্রচারের দরুন বিক্ষোভ, মানববন্ধন, ধর্মঘট, আন্দোলন, প্রত্যুক্তি ইত্যাদি অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে অত্যাধিক মদ্যপানাসক্ত পরীমণি বোট ক্লাবে অনুপ্রবেশ করে মাতালবস্থায় অনুপ্রবিষ্টকারীদের মাঝে অশ্লীল যোজনা সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এক শ্রেণীর সাংবাদিকবৃন্দ জোরপূর্বক ধর্ষণের উপাখ্যান নির্মাণ করতে পরীমণীকে নানাপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। আর উক্ত অবাস্তব ও অসত্য সংবাদের নিমিত্তে সমগ্র দেশ ও জাতির মধ্যে ভীষণভাবে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি উত্পাদন হয়েছে।

যে কোন ব্যক্তির, রাষ্ট্রের বা মানবস¤প্রদায়ের কল্যাণ ও সুখসমৃদ্ধির অভিপ্রায়ে প্রত্যেক সাংবাদিকদের অব্যাপার, অসত্য, অবাস্তব সংবাদ পরিহার করে বিশুদ্ধ বা নির্ভুল সংবাদ প্রচার করার প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া শ্রেয়স্কর ও মঙ্গলজনক।
লেখক: মুন্সী বশীর; মন্ট্রিয়াল, কানাডা।