টরন্টোর বুকে ডেন্টনিয়া পার্কে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের স্থায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৌধ, আমাদের বাঙালিদের প্রাণের শহীদ মিনার। সিটির কিছু সংস্কার কাজ বাকি থাকায় সর্ব সাধারণের জন্য ১০০ ভাগ উম্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি কিন্তু খুব শীগ্রই করা হবে আশা করছি।

প্রথমত টরন্টোতে একটি স্থায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৌধ, যাকে আমরা বাঙালিরা বরাবর শহীদ মিনার বলে আসছি, সেই শহীদ মিনার করার জন্য কয়েক যুগ ধরে অনেক বাংলাদেশি চেষ্টা করেছেন। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

নভেম্বর ৭, ২০২০ তারিখে দেশে করনোর পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির সীমাবদ্ধতা থাকায় টরন্টো মেয়র জন টরি, সিটি কাউন্সিলর ব্রাড ব্রাডফোর্ড, এম পি ন্যাথানিয়াল আরস্কীন, এম পি পি ডলি বেগম ও রীমা ম্যাকগুয়ান এবং OTIMLD বোর্ড মেম্বারদের নিয়ে গ্রাউন্ড ডিগিং এর মাধ্যমে আমাদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ৪ মাসে মহামারী, বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে, বৈরী আবহাওয়ার ভিতরে আমরা নির্মাণ কাজ শেষ করতে সক্ষম হই। এই অর্জন আমাদের সবার। সকল টরন্টোবাসীর, অর্থ-দাতাদের, সকল শুভাকাঙ্খীদের।

সর্ব প্রথম আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই OTIMLD Inc. বোর্ডের বর্তমান ও প্রাক্তন সকল পরিচালকদের, যাদের উদ্যোগ, সহযোগিতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা একত্রে এতটা পথ আসতে সক্ষম হয়েছি।

এরপর আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের সকল ডোনারদেরকে, যাদের আর্থিক সহযোগিতায় আমরা আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছি। আপনাদের অনুদানেই টরন্টোর বুকে মাতৃভাষা দিবস সৌধ, আমরা যাকে বলি শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।

ধন্যবাদ জানাই, মোহাম্মদ আলী বুখারী ভাইসহ সকলকে যারা এর আগে এই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য চেষ্টা করেছেন।

ধন্যবাদ জানাই গ্রেটার ঢাকা এসোসিয়েশনকে- এই সংগঠনের উদ্যোক্তা হবার জন্য।
ধন্যবাদ জানাই, সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি আজীম দেওয়ানকে, যার উদ্যোগে আমাদের ইচ্ছাশক্তিকে সাংগঠনিক রূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।

ধন্যবাদ জানাই, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রিজুয়ান রহমানকে, সেই শুরু থেকে যার এই সংগঠনের জন্যও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৌধের জন্য ছিল নিবেদিত প্রাণ। বিভিন্ন কাজে রিজওয়ানের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।

ধন্যবাদ জানাই, প্রাক্তন সকল পরিচালকদের যারা ব্যক্তিগত কারণে অবসর নিয়েছেন। তাদের সকলের অবদান ছিল প্রশংসনীয়।

ধন্যবাদ জানাই সামসুল আলম ভাইকে- বিগত বছরগুলোতে তিনি মাতৃভাষা দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত-ফেরীর আয়োজন করে এসেছেন। কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করবে টরন্টো প্রবাসী।

ধন্যবাদ জানাই, টরন্টোর মেয়র জন টরি, প্রাক্তন সিটি কাউন্সিলর জ্যানেট ডেভিস, বর্তমান সিটি কাউন্সিলর ব্রাড ব্রাডফোর্ড, এমিপিপি ডলি বেগম, বিজনেস ডেপেলপ্টমেন্ট অফিসার সিটি অব টরন্টো ট্রিনা সিজারিও, অন্টারিও পার্ক এন্ড রিক্রেশন প্রজেক্ট কোওর্ডিনেটরটারা কোলি।

ধন্যবাদ জানাই মনির বাবুকে। প্রথম দিকের ডিজাইনের কাজ ছাড়াও আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।

ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই আলবিওন বিল্ডার্সকে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য। সাথে প্রোজেক্ট ম্যানেজার মোহাম্মাদ আলী হোসেনকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
ধন্যবাদ জানাই কন্সট্রাকশন কমিটি মেম্বার্স জামাল হোসেন, মনির ইসলাম, আবুল আজাদ, সামসুল রিয়াজ সর্বক্ষণ নির্মাণ কাজে উপস্থিত থেকে সাহায্য করার জন্য।

ধন্যবাদ জানাই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শহিদুল ইসলাম মিন্টু, সওগাত আলী সাগর, সাইদুন ফয়সল, আহাদ খন্দকার, মাহাবুদ ওসমানীসহ দেশে বিদেশে সকল সাংবাদিকদের, যারা আমাদের মাতৃভাষা দিবস সৌধের খবর প্রকাশ করেছেন।
ধন্যবাদ জানাই কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠন, গুণীজন, কমিউনিটি লিডারস ও শুভাকাক্সক্ষীদের, যারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময় পরামর্শ ও সাহস দিয়েছেন। সর্বোপরি পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটিকে ধন্যবাদ জানাই।

আমরা যখন কাজ করেছি, সময় সময় হয়তো কিছু অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটি আমাদের হয়েছে। সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সৌধ, কিংবা শহীদ মিনার যেভাবেই বলি না কেন, আমরা যেন সকলেই আনন্দের সাথে ভাগাভাগি করতে পারি।
ছোট খাটো ভুল ত্রুটি উপেক্ষা করে আমরা যেন প্রাণেপ্রাণে সকলে অংশগ্রহণ করতে পারি। আমরা যেন নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে অন্য জাতির আছে আমাদের দেশ, আমাদের সংস্কৃতি আমাদের মূল্যবোধকে খাটো না করি। আমাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা যেন দেশের নাম আরো উজ্জ্বল করতে পারি। আরো বড় বড় কাজ করতে পারি। হতে পারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এই টরন্টোতে একটি স্থায়ী স্মৃতিসৌধ। সবার জন্য সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।