হিমাদ্রী রয়

কবেকার শৈশবে আমাদের রক্তি নদীর বাঁকে
পদ্মজলের বুকে হাঁসের জলকেলি
আর কাশবন দেখে দেখে
তাঁর সাথে পথচলা শুরু।
কখনো চৈত্রের খরতাপে
ঢালু পাড়ের ঝিকিমিকি
বালুর উপরে পা রেখে
কখনো আম গাছের ছায়ায়
আমের বোলের ঘ্রাণ মেখে
দুরন্ত বৈশাখে
হারিকেনের আলো জ্বলা সন্ধ্যায়
সহজ পাঠের অক্ষর ছুঁয়ে স্পর্শ করেছি যাকে।
এর পর থেকে অযাচিত হয়ে
মাথায় রেখেছেন হাত
আগলে রেখেছেন আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে
নিজেকে গুড়িয়ে আবার
গড়তে শিখিয়েছেন
জীবনের দারুণ দুর্বিপাকে
তিনি রবীন্দ্রনাথ।
তিনি ব্যাক্তি নন ভগবানও নন
তিনি ব্যাপ্তি এক সীমাহীন আকাশ
সুন্দরের প্রকাশ।
রবীন্দ্রনাথ একটি সংস্কৃতি
এক রুচি একটি প্রতিষ্ঠান
জাগতিক সুখে-অসুখে প্রেমে-বিরহে
আনন্দ-দুঃখে
তাঁর বাণী জীবনের সমাধান
রবীন্দ্রনাথ আমাদের যাপনের অভিধান।
সকল অনুভূতির অন্তর্যামী হয়ে
বসে আছেন মননে
কখন ছিলেন না, কখন এসেছেন,
আপন করেছেন জানি নে।
যেন
‘হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে
রয়েছো হৃদয়ে গোপনে’
শুধু জানি
প্রেম দিয়ে তাঁকে করেছি গ্রহণ
পূজায় খুঁজতে চাইনে।
রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিনের অভ্যেস
তাঁর কাব্য তাঁর গীতিতে
আমার সুপ্রভাত
তাঁর বাণী লয়ে নিদ্রা যাই
আমার স্বপ্নরাত।