Home কানাডা খবর এ মাসের শেষে কানাডা সফরে আসছেন বাইডেন, দেবেন পার্লামেন্টে ভাষণ

এ মাসের শেষে কানাডা সফরে আসছেন বাইডেন, দেবেন পার্লামেন্টে ভাষণ

অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অটোয়ায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করবেন। চলতি মাসের শেষের দিকে দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন তিনি। গত ৯ মার্চ, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় সিবিসি নিউজ।

মার্কিন প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা অংশীদারিত্বের প্রতি আমেরিকার প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করতে এবং আমাদের ভাগ করা নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি ও মূল্যবোধের প্রচার করতে বাইডেন ২৩ ও ২৪ মার্চ কানাডা সফর করবেন।

তিনি আরও জানান, বাইডেন ও ট্রুডো ইউক্রেনকে সমর্থন করার চলমান প্রচেষ্টা, রাশিয়া ও তার যুদ্ধ প্রচেষ্টার সমর্থকদের দ্বারা ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিশ্বের বাকি অংশে যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা নিয়েও আলোচনা করবেন। জিন-পিয়েরে জানান, আঞ্চলিক বিষয়গুলোর মধ্যে, তারা উভয় দেশকে প্রভাবিত করে আফিম আসক্তি সংকট এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের লড়াই নিয়ে আলোচনা করবেন। মার্কিন-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরতে কানাডার পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রুডো বলেন, যেহেতু আমরা ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছি, সুতরাং আমরা আমাদের মহাদেশ এবং আমাদের পারস্পরিক মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য একসাথে কাজ চালিয়ে যাব। সীমান্তের উভয় পাশে মানুষ ও ব্যবসার জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করব। পাশাপাশি নেট-জিরো (গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন এবং পরিবেশ থেকে তা সরানোর সামঞ্জস্য রক্ষাকে নেট জিরো বলা হয়) বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী হিসাবে শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলব। আমি কানাডায় রাষ্ট্রপতি বাইডেনকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ, বলেন ট্রুডো।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে নিশ্চিত করেছেন যে বাইডেনের সাথে ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন থাকবেন। তিনি বলেন, দুই নেতা পারস্পরিক প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, সাপ্লাই চেইন শক্তিশালীকরণ এবং হাইতির সংকট মোকাবেলা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
দুই রাষ্ট্র পক্ষের সূত্রগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ট্রুডো একে অপরকে সত্যিকারের পছন্দ করেন। যদিও এই মুহূর্তে কানাডা-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু তিক্ততা রয়েছে, তবে আগের ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে বিশৃঙ্খল সম্পর্কের চেয়ে তুলনামূলক দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক শান্তিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মাত্র একবার কানাডা সফর করেছিলেন। কুইবেকের শার্লেভয়েক্সে জি ৭ শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষ্যে কানাডা সফরে এসেছিলেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী ট্রæডোকে ব্যক্তিগত আক্রমন করায় সেবারের সম্মেলন খুব একটা সুখকর হয়নি দুই দেশের জন্য।
ট্রুডো সরকার প্রেসিডেন্টের সফরের জন্য বাইডেন প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছিলো। অটোয়া এটিকে ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার এই সময়ে কানাডা-মার্কিন সম্পর্কের গভীরতা এবং শক্তি প্রদর্শনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে। গত জানুয়ারিতে মেক্সিকো সিটিতে উত্তর আমেরিকান নেতাদের সম্মেলনের সময় হোয়াইট হাউস অবশেষে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কানাডা সফরের বিষয়ে সম্মত হয়।

বাইডেন এবং ট্রুডো তাদের সাক্ষাতে এই মুহূর্তের কিছু বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একটি ঊর্ধ্বতন সরকারী সূত্র জানিয়েছে, দুই নেতা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং দেশটিকে আরও সমর্থন দেওয়ার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করবেন। তারা পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে কথা বলবেন। এ ছাড়াও বাইডেন এবং ট্রুডো কানাডা-মার্কিন সীমান্ত এবং অভিবাসী সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাইডেন এমন এক সময় কানাডা সফরে আসছেন যখন ঊর্ধতন মার্কিন কর্মকর্তারা হাইতিতে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। আমেরিকান কর্মকর্তারা হাইতিতে একটি বহুজাতিক বাহিনীকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য কানাডাকে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অটোয়া সেটির বিরোধীতা করে এবং এর পরিবর্তে হাইতির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য লক্ষ লক্ষ ডলার সহায়তা এবং সাঁজোয়া যানের একাধিক চালানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Exit mobile version