অনলাইন ডেস্ক : অত্যন্ত সংক্রমক ও মারাত্মক বিপদজনক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা কানাডার পোল্ট্রি পাখিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত অন্টারিও, নোভা স্কশিয়া, নিউফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডরের অন্তত ১২টি পোল্ট্রি খামারে এই ফ্লুর সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এছাড়া আলবার্টা ও কুইবেকেও সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মানব দেহে এর সংক্রমণের শঙ্কা এখনো উদ্বেগজনক না হলেও এটি দেশের পোল্ট্রি শিল্পকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।

দেশে হাঁস-মুরগি পালন নিয়ন্ত্রলকারি ফেডারেল সরকারি সংস্থা কানাডিয়ান ফুড ইন্সপেকশন এজেন্সির প্রধান কর্মকর্তা ক্রেগ প্রাইস বলেছেন, ‘কানাডায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি খুবই গুরুতর সমস্যা। এটি পাখিদের মৃত্যুহার বাড়িয়ে দেয়। ফলে খামারিদের উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় এবং তারা ক্ষতির মুখে পড়ে।

প্রাইসের মতে, কানাডার পোল্ট্রি শিল্পখাতে যে কোন বিরূপ প্রভাব দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কানাডা থেকে বছরে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের পোল্ট্রিপণ্য রফতানি হয়। কিন্তু যখনই এভিয়ান ফ্লু বা এ ধরনের কোন সংক্রমণ দেখা দেয় তখনই রফতানি ব্যহত হয়, যা দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

ফুড ইন্সপেকশন এজেন্সির মতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার একটি হচ্ছে দক্ষিণ অন্টারিও। সেখানে ৬ টি খামারে এভিয়ান ফ্লুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ওই খামারগুলোকে চিহ্নিহ্নত করে পৃথক রাখা হয়েছে। এছাড়া এগুলোর ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা অন্য খামারগুলোকেও কঠোর নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে।

কানাডায় এই ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে প্রাইস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ টি অঙ্গরাজ্যে স¤প্রতি এভিয়ান ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। আর বসন্তের সময় পরিযায়ী পাখিরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডার দিকে আসতে থাকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এসব পাখির মাধ্যমেই এখানে ফ্লুটি ছড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে যা ঘটেছে তার উপর ভিত্তি করে প্রাইস বলেন, এভিয়ান ফ্লু সম্ভবত কানাডার প্রতিটি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়বে। এদিকে সানিব্রæক হেলথ সায়েন্স সেন্টারের চিকিৎসক ও টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট সামিরা মুবারেকা বলেছেন, পাখিদের মধ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রভাব গুরুতর হলেও মানুষের মধ্যে এটির সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কম। তিনি বলেন, এই ফ্লুটি ব্যক্তি থেকে ব্যাক্তিতে ছড়িয়ে পড়ার কোন ঘটনা এখনো ঘটেনি। তবে আপনি যদি আক্রান্ত কোন পশু পাখির খুব নিকটবর্তী হন তাহলে সংক্রমিত হতে পারেন। এছাড়া পাখির গোশত ভালভাবে রান্না করে খাওয়াতে ভয়ের কিছু নেই। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সতর্ক থাকা। সূত্র : সিবিসি