অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় একদিকে চলছে ভ্যাকসিন দেওয়া, অন্যদিকে দ্বিগুণ মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনার প্রসার। সেজন্য নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কানাডার জনস্বাস্থ্য বিভাগের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. তেরেসা ট্যাম।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তির হার গত সপ্তাহে ৬ শতাংশ বেড়েছে। আইসিইউ দরকার এমন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৪ শতাংশ। কানাডায় বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ৬০০ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হচ্ছেন।’

সেই প্রেক্ষিতে অন্টারিওতে তৃতীয় বারের মতো লকডাউন চলছে। কুইবেকের সান্ধ্য আইনও বহাল আছে। এপর্যন্ত কানাডায় কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৪ আর মৃত্যু বরণ করেছে ২৩ হাজার ৩১৩ জন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভ্যাকসিন সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এ সংকটের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। আরও কিছু সময় পর্যন্ত আমাদের শক্ত থাকতে হবে। প্রতি সপ্তাহেই বেশি করে ভ্যাকসিন আসছে এবং তা দ্রুত কার্যকরী করা হচ্ছে।’

আগামী জুনের মধ্যেই ফাইজার-বায়োএনটেক আরও ৫০ লাখ ডোজ এমআরএনএ ভ্যাকসিন পাঠাবে। এ নিয়ে স্প্রিংয়েই তাদের সরবরাহ দাঁড়াবে ১ কোটি ৭৮ লাখ ডোজে। এপ্রিল এবং মাসে প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখ ডোজের বেশি ভ্যাকসিন কানাডায় পাঠানোর আশা করছে। জুনে এ সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছে যাবে।

ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী অনীতা আনান্দ বলেন, ‘৩০ জুনের মধ্যেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৪৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশা করছে কানাডা। এপ্রিলের শেষ নাগাদ সিঙ্গেল ডোজের জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনও হাতে পাওয়া যাবে।’

জনসন অ্যান্ড জনসনের সরবরাহ বাদ দিলেও উৎপাদন বা রপ্তানিতে অপ্রত্যাশিত ব্যাঘাত না ঘটলে আগেই ৪ কোটি ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার অবস্থানে রয়েছে কানাডা। এটা হলে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন দিতে চার মাসের বেশি সময় লাগবে না। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেককে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন দিতে ৩ কোটি ১০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনের প্রয়োজন পড়বে কানাডার।

অন্টারিওর প্রিমিয়ার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে রিক হিলার বলেন, ‘৮০ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ভ্যাকসিন দিতে এপ্রিল পর্যন্ত লেগে যাবে বলে আমরা ধারণা করেছিলাম। কিন্তু ৭৫ ও ৭০ বছর বয়সীদেরও ভ্যাকসিন দিয়ে ফেলেছি আমরা। এখন কম বয়সীদেরও দেওয়া শুরু হয়েছে।’

এদিকে, নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনার সংক্রমণ কানাডায় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া বিধিনিষেধ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সত্ত্বেও নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট দেশটির সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বর্তমানে দেশটিতে জনসাধারণের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন বিধিনিষেধ বলবৎ রয়েছে। গত বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সীমান্তও বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও নানা ধরণের কড়া বিধি মোতাবেক একেবারে সীমিত করে দেওয়া হয়েছে।