অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় ১মে পর্যন্ত ১৩ মিলিয়ন মানুষ করোনা মহামারির টিকার ১ম ডোজ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ হাজার জনেরও কম কোন ধরণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শতকরা হিসাবে এই হার ০.০৩৪ শতাংশ। এদের মধ্যে ৩৮০০ জন (০.০২৮%) মৃদু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং ৭৪৮ জন (০.০০৬%) তীব্র পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার অভিযোগ করেছেন। মৃদু প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ছিল সামান্য ব্যাথা ও জ্বরের উপসর্গ আর তীব্র প্রতিক্রিয়ার অভিযোগ যারা করেছেন তাদের টিকা নেয়ার পর প্রচন্ড ব্যাথা ও জ্বর এবং কারো একাধিকবার বমি হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার অভিযোগকারী এসব টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে ২৫৯২ জন ফাইজারের এবং ১৫৬০ জন মর্ডানার ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। কানাডাতে এই দুটি কোম্পানির টিকাই বেশিরভাগ মানুষ নিচ্ছেন। আলবার্টা, অন্টারিও, ম্যানিটোবা, নিউব্রান্সউইক, নোভা স্কশিয়া ও কুইবেকসহ প্রায় সব প্রভিন্সেই ১ম ডোজ হিসেবে অস্ট্রাজেনকার কোভিশিল্ড টিকা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অন্টারিও আর কুইবেক থেকে বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে।

১মে পর্যন্ত অন্টারিওতে টিকা নেয়ার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার অভিযোগ করেছেন ২৬৮৪ জন। সেখানে টিকা গ্রহণ করেছেন ৬.১ মিলিয়ন লোক। সেই হিসেবে প্রতি এক লাখে অভিযোগকারীর সংখ্যা মাত্র ৪৩ জন। এছাড়া অভিযোগকারীদের ৯৭% ছিল মৃদু উপসর্গের। তীব্র উপসর্গের অভিযোগ ছিল ৮৬ জনের। অন্যদিকে কুইবেকে ১ম ডোজ টিকা নেয়ার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন ২৬৬৩ জন। এদের ৯০% এর অভিযোগ ছিল মৃদু উপসর্গের বাকিদের তীব্র।

৮মে পর্যন্ত ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে টিকার ১ম ডোজ নিয়েছে ২.২ মিলিয়ন মানুষ। এদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার অভিযোগ এসেছে ১০১৬ টি। এদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার অভিযোগ ছিল ৬০ টি (৬%) আর বাকি ৯৫৬ টি (৯৪%) মৃদু উপসর্গের অভিযোগ। অন্টারিও ও কুইবেকে কোভিশিল্ডের টিকা গ্রহণকারীরা বেশি অভিযোগ করলেও ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে অভিযোগ বেশি এসেছে মর্ডানার বিরুদ্ধে।

জ্বর আর ব্যাথা ছাড়াও আরও যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীরে টিকা নেয়ার অংশটি ফুলে যাওয়া, এর আশেপাশে ্যরাশ বের হওয়া, চুলকানো, লাল হয়ে যাওয়া, মাথা ব্যাথা করা, ঘুম কম হওয়া ইত্যাদি। অভিযোগকারীদের বেশির ভাগেরই বয়স ৩০ থেকে ৪৯ এর মধ্যে। এছাড়া অভিযোগকারীদের মধ্যে পুরুষের চাইতে মহিলার সংখ্যা সামান্য বেশি।

মৃদু উপসর্গগুলো ২/১ দিনের মধ্যে চলে গেলেও তীব্র উপসর্গে আক্রান্তদের দ্রæত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যে ৭৪৮ জনের এ ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন ৫২০ জন, অস্ট্রাজেনকা/ কোভিশিল্ড ১১০ জন এবং মর্ডানা ১০৩ জন। কানাডায় টিকা নেয়ার পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এ পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন এই ৫৬ জনের মধ্যে মাত্র ২ জনের মৃত্যু ছিল টিকা জনিত কারণে। ওই ২ জন জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়েছিলেন। টিকা নেয়ার পর তাদের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে তারা মৃত্যুর মুখে ঢলে পরেন। বর্তমানে কানাডায় জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা বিতরণ ও প্রদান বন্ধ রয়েছে। সূত্র : রেডিও কানাডা