অনলাইন ডেস্ক : কানাডা জুড়ে বিভিন্ন গ্যাস স্টেশনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গ্যাসোলিনের (পেট্রল) দাম বেড়েই চলেছে। এই মূল্য বৃদ্ধি আরো কিছু দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অতি প্রয়োজনীয় এই পন্যটির দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবন-যাত্রায় বিরূপ প্রভাব পড়বে। কেননা এর ফলে যাতায়াত ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে, যার প্রভাব গিয়ে পড়বে নিত্য পণ্যের মূল্যের উপর। আসছে শীতে তাই বাড়তি খরচের আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে মানুষকে। এছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদাও বেড়ে যেতে পারে।

কুইবেকের বিভিন্ন গ্যাস স্টেশনে গত ১৯ অক্টোবর প্রতি লিটার পেট্রল বিক্রি হয়েছে ১.৫৫ ডলারে। ২০০৮ সালের পর এটি সর্বোচ্চ মূল্য বলে জানিয়েছে সিএএ-কুইবেক। তবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জ্বালানির মূল্য ৩৩% বৃদ্ধি এবং করোনা মহামারির কারণে অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্যাসোলিনের এই মূল্যবৃদ্ধিকে অনেকটা প্রত্যাশিত মনে করা হচ্ছে।
দ্য ওপেকের (অর্গানাইজেশন অব পেট্রলিয়াম এক্সপোটিং কান্ট্রিজ) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরি। আর সেই লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের চাহিদা ও উৎপাদনের সমন্বয় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে ওপেক। প্রাকৃতিক সম্পদ ও জ্বালানি বিষয়ক অর্থনীতিবীদ জেইন থমাস বার্নার্ড বলেন, ওপেক যা-ই বলুক কানাডার অর্থনীতি কিন্তু প্রত্যাশার চাইতে দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে।
জ্বালানির সরবরাহ বাড়ানো গেলে পণ্যমূল্য আরো কমে আসবে। তবে মহামারির কারণে সব জায়গায় এখন চাহিদা ও উৎপাদনের স্বাভাবিক সূত্র কাজ করবে না। তিনি বলেন, ‘আমি গত ৫০ বছরে বিশ্বের জ্বালানির বাজার পর্যবেক্ষণ করছি। বর্তমান সময়ের মতো পরিস্থিতি আগে কখনো দেখিনি।’ তার মতে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একটি পক্ষ নগদ লাভের আশায় উৎপাদন বৃদ্ধির পক্ষে আর অন্যটি ভবিষ্যতে আরো লাভের আশায় উৎপাদন সীমিত রাখার পক্ষে।

এদিকে পরিসংখ্যান কানাডার হিসাব মতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে জীবন-যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হার ৪.৪%। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর এটিই কানাডায় সর্বোচ্চ ব্যয় বৃদ্ধির হার। অন্যদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবং পরিবেশ রক্ষার তাগিদে মানুষ ইলেকট্রিক কার (বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি) ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিউ উইনডোর হিসাব মতে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি প্রায় ৮০% বেড়েছে। সূত্র : রেডিও কানাডা