Home কানাডা খবর কানাডা জুড়ে ‘মাল্টিকালচারালিজম ডে’ পালিত

কানাডা জুড়ে ‘মাল্টিকালচারালিজম ডে’ পালিত

অনলাইন ডেস্ক : গত ২৭শে জুন, সোমবার কানাডার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম-বর্ণ এবং বহু সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে সকল প্রভিন্স-এর বিভিন্ন জায়গায় মাল্টিকালচারালিজম ডে পালিত হয়। বর্তমান বিশ্বের প্রধানতম বহুজাতিক দেশ হিসেবে কানাডা বিবেচিত হয়ে আসছে যেখানে পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্তের মানুষ এবং তাঁদের সংস্কৃতি সম্মানের সাথে স্থান পেয়েছে। এই সব বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মানুষদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ইতোমধ্যে পৃথিবীর বুকে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

উল্লেখ্য, সপ্তদশ শতাব্দীর একেবারে শুরু থেকে উত্তর আমেরিকার এই ভূখণ্ডে ইউরোপ থেকে অভিবাসন প্রক্রিয়ার ঢেউ শুরু হলে সেই স্রোতে মূল অভিবাসী ছিল ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের অভিবাসীরা। বর্তমান সময়ে কানাডার জনগোষ্ঠীর মূল অংশ হচ্ছে এই ইংরেজী এবং ফরাসীদের উত্তরসূরীরা। তবে ধীরে ধীরে অভিবাসন স্রোতে এ ভূখণ্ডে আসতে থাকে পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ। বর্তমান সময়ের আধুনিক কানাডার ৪০ শতাংশ মানুষ হচ্ছে ইংরেজ এবং ফরাসী জাতির বাইরে। শুধু টরন্টো শহরে বর্তমানে ২৩২টি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করেন। কানাডার এই বহু জাতির এই মহা সম্মীলনকে সম্মান জানিয়ে ২০০২ সাল থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৭শে জুনকে ‘মাল্টিকাচারালিজম ডে’ পালিত হয়ে আসছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়েরে ট্রুডো কানাডার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৭১ সালে মাল্টিকালচারালিজমকে সরকারী নীতির অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে এই ধারাকে গতিশীল করার জন্য ‘দ্য কানাডিয়ান মাল্টিকালচারালিজম এক্ট’ পাশ করা হয়। ১৯৯১ সালে ‘কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং এক্ট’ পাশ হলে সেখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় কানাডার গণমাধ্যমে বহুজাতিকতার স্থান দিতে হবে। সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন ভাষাসংস্কৃতি এবং জাতির মানুষকে নিয়োগ দিতে হবে। বর্তমান সময়ের কানাডার এই বহুজাতিকতা এবং বহুমাত্রিকতার জন্য এই দুটি আইন বিশেষভাবে কাজ করে। সেই সাথে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টায় কার্যকরী করা ‘কানাডিয়ান চার্টার অব রাইটস এন্ড ফ্রিডম’ কানাডায় আসা নতুন অভিবাসীদের এই ভূমিকে নিজের করে নেয়ার এক বিশেষ সুযোগ এবং অনুভূতির ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়।

দেশব্যাপী মাল্টিকালচারালিজম ডে পালন কানাডার সব মানুষকে উপলব্ধি করাতে সক্ষম হয়েছে, একটি দেশে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম-বর্ণ, লৈঙ্গিক এবং সংস্কৃতির মানুষ থাকবেই। সবাই সবার প্রতি সম্মান এবং ভালোবাসা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করলে সেই ভূখণ্ডটি হয়ে উঠতে পারে সবার জন্য সত্যিকারের এক বাসযোগ্য স্থান। নিঃসন্দেহে, বর্তমান কানাডা সেই পথেই হাঁটছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কানাডিয়ান মাল্টিকালচারালিজম ডে উপলক্ষে তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, কানাডার অর্থনীতির মূল গতি হচ্ছে এর মাল্টিকালচারালিজম। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সবার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই পারে কানাডার বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মকে একটি সত্যিকারের ভালোবাসা এবং ভালো লাগার জায়গা উপহার দিতে।

Exit mobile version