আতোয়ার রহমান

হাজার বছর ধরে পাতে খাবার তুলে দিতে
দানবীয় কর্মঠ দেহের ইস্পাত কঠিন পেশির বিস্তারে
পৌরাণিক যোদ্ধার মতো এগিয়ে যাচ্ছ
আদিগন্ত ফসলের ক্ষেতে আলপথ ধরে
তোমাকে দেখে হেসে ওঠে থানকুনি লতা, ঘাস ফড়িং
ল²ীপেঁচা আর ডাল উজাড় করে ফুটে ওঠা ফুল।
শ্রমে আর সৃষ্টিশীলতায় মাতিয়ে তোলো শস্যপূর্ণ ধরিত্রী
ডানাময় ওম মেখে সাক্ষী থাকে প্রজাপতি
অথচ কতকাল হয়নি রান্না, অভুক্ত তুমি
তোমার খালিপেটে করাত চালিয়ে
নীল নিশানা তোলে কেউ আকাশ ছাপিয়ে।
নতুন ফসল আসবে বলে বুকে আশা বেঁধে রাখো
মহাজনেরা যেমন তাদের গোডাউনে শস্য মজুত রাখে।
অগ্রহায়ণে ধানের নৌকা ভেসে আসে ঢেউয়ের আদরে
নৌকোর সব ধান নিয়ে যায় মহাজন এসে
ফুল ফোটানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে
তোমার গোপন কষ্টগুলো ঢেকে রাখ দুঃখের চাদরে।
মাজরা পোকা, শ্যামা পোকা যেমন তোমার কষ্টে
ফলানো ধানের গাছের রস চুষে চুষে খায়
তেমনি চিল, বাজপাখি ইঁদুরেরা খুবলে নেয়
একে একে স্বপ্ন-বুকের পাঁজর-মেরুদন্ড-কোমল হৃদয় ও শরীর…
রোদের তাপে অনাবৃষ্টিতে ধীরে ধীরে শুকিয়ে
যাওয়া ধানের চারার মতো শুকিয়ে গেছে তোমার জীবনরস।
সমস্ত অবহেলা, তাচ্ছিল্য, বঞ্চনাকে ভ্রুক্ষেপ না করে
তবু তুমি জীবনের আদিটাকে রাখনি অনাবাদী।
টরন্টো, কানাডা