অনলাইন ডেস্ক : চরম দারিদ্রের কবলে আফগানিস্তান। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ অনাহারের সঙ্গে লড়াই করছেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন যে, প্রায় ৪০ বছরের যুদ্ধ ও দখলদারিত্বের কারণে সৃষ্ট অপুষ্টি ও অনাহার থাবা বসাবে মানব জাতির ওপরে। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তনি গুতেরেস জানিয়েছেন, শীত আসার আগেই যদি আফগানিস্তানে শিশুদের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়া না হয়, তাহলে মৃত্য অবধারিত।

এরকম ১০ লক্ষ আফগান শিশুর মাথায় ঝুলছে মৃত্যুর খাড়া। আগামী বছর দারিদ্র্যের হার ৯৮ % পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা জাতিসংঘের। জাতিসংঘের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মহাসচিব গুতেরেস এই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন। ওই বৈঠকে অ্যান্তনি গুতেরেস বলেন, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে দেশে দারিদ্র্য হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে।

সাধারণ সরকারি পরিষেবা ধ্বংসের মুখে পৌঁছে গিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধে অনেকে ঘরহারাও হয়েছেন।

আফগানিস্তানের এক তৃতীয়াংশ মানুষ জানে না কোথায় গেলে তারা খাবার পাবে বা কোথা থেকে তাদের খাবার আসবে। এই মুহূর্তে আফগানবাসীর প্রয়োজন খাদ্য-পানীয়। দরকার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর। গত মাসে তালেবানরা আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নেয়, তার আগে থেকেই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। চরম খরার কবলে পরে নষ্ট হয়েছে দেশের ৪০% ফসল, যার জেরে খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫%।

তালেবানের সঙ্গে আফগান সেনাবাহিনীর অনবরত লড়াই চলাকালীন কৃষকদের ফসল রোপণে বাধা দেয় আফগান সেনা। যা মূল্যবৃদ্ধির আরেকটি কারণ। জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেন, “কয়েক দশকের যুদ্ধ, দুর্ভোগ আর নিরাপত্তাহীনতার পর আফগানরা সম্ভবত তাদের সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ের মুখোমুখি, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে বিশ্ব সাক্ষী থাকবে ভয়াবহ মৃত্যু মিছিলের।”

এই মুহূর্তে চরম খাদ্য সংকট এড়াতে ৬০৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। সোমবার আমেরিকা আফগানিস্তানকে ৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড এই সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। এই সম্মেলন থেকে মোট ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্যের আশ্বাস মিলেছে। যদিও তালেবান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ইতিমধ্যেই, বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আফগানিস্তানে অর্থ প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। তবে জাতিসংঘের মহাসচিবের মত, শুধু নগদে কাজ হবে না। এই মুহূর্তে ক্ষুধায় জর্জরিত আফগানিস্তানের দরকার খাদ্য।
সূত্র : intelligencer