Home আন্তর্জাতিক গাজায় দুর্ভিক্ষের আগুন, মায়ের কোলে মৃত্যু হলো ক্ষুধার্ত মেয়ের

গাজায় দুর্ভিক্ষের আগুন, মায়ের কোলে মৃত্যু হলো ক্ষুধার্ত মেয়ের

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে – এমন একজন ছয় মাস বয়সী ফিলিস্তিনি শিশু তার মায়ের কোলে মারা গেছে। ক্রমাগত তীব্রতর হওয়া দুর্ভিক্ষের সর্বশেষ শিকারদের তালিকায় যুক্ত হলো আরও একজনের নাম।

শনিবার (২৬ জুলাই) লাইভ প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শুক্রবারের মর্মান্তিক ঘটনাটি আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জয়নাব আবু হালিব নামের মেয়ে শিশুটিকে গতকাল দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তার মা। কিন্তু চেষ্টা আর সফল হয়নি, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সে প্রাণ হারায়।

মা ইসরা আবু হালিব আজ সিএনএনকে বলেছেন, ‘মেয়েটি গত তিন মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে এবং বের হচ্ছে।’

‘যানবাহন না থাকায় আমাকে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে হাঁটতে হয়েছিল…কাঁচা রাস্তা এত দীর্ঘ ছিল… আবহাওয়া এত গরম ছিল, কিন্তু ক্ষুধার্ত থাকা সত্ত্বেও এবং পানি না থাকা সত্ত্বেও আমি হাঁটতে থাকি।’

ইসরা বলেন, ‘হঠাৎ আমার মনে হলো সে নড়াচড়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে দিয়েছে; তার শরীর ভারী হয়ে উঠেছে।’

সিএনএন-এর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জিজ্ঞেস করছিলেন, ‘আমি আর কি বলবো বুঝতে পারছি না। পৃথিবীর জেগে উঠতে জয়নাবের মতো আর কত নিষ্পাপ শিশুর না খেয়ে মারা উচিৎ?’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল-বুরশ এক্স-পোস্টে বলেছেন, জয়নাব গুরুতর অপুষ্টির জটিলতায় মারা গেছেন। গাজায় পাঁচ বছরের কম বয়সী ২ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।

এদিকে, গাজায় দুর্ভিক্ষ নিয়ে জাতিসংঘের বারবার সতর্কতার পর বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, অঞ্চলটিতে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ অভুক্ত অবস্থায় দিন পার করছে। সংস্থাটি গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, অপুষ্টি বেড়েই চলেছে। ৯০ হাজার নারী ও শিশুর জরুরি চিকিৎসা দরকার।

গাজায় চলতি সপ্তাহে অনাহারের সতর্কতা আরও জোরদার হয়, যখন অপুষ্টিতে ভোগা মৃত্যুর সংখ্যা ১২২ জনে দাঁড়িয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলায় সবশেষ প্রায় ৬০ হাজার মানুষ গাজায় মারা গেছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। গাজার বেশিরভাগ মানুষ কয়েকবার করে ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

 

Exit mobile version