Home আন্তর্জাতিক গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস

গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস

অনলাইন ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে হামাস। প্রস্তাবে হামাসের এই সম্মতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দুটি দলে ১০ জন করে জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর বিনিময়ে ৭০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে ইসরায়েল গাজার নির্দিষ্ট এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং ইসরায়েলে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা বেশ কিছুসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। খবর-এএফপি

গাজায় অব্যাহত হামলা ও অবরোধের মধ্যে ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্পেন। রোববার মাদ্রিতে ওই বৈঠকে ইউরোপ ও আরব দেশগুলোর ২০ নেতা মিলিত হন। সেখানে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ভয়ংকর পরিস্থিতি চলছে। গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এ যুদ্ধ থামাতে হবে।’ বৈঠকে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা বলেন, ইসরায়েলের সরকারের উচিত গাজায় দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা বন্ধ করা।

গাজায় স্কুলে তৈরি করা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে সেখানে আশ্রয় নেওয়া অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৮ জনই শিশু। রয়েছেন বেশ কয়েকজন নারীও। হামলায় আহত ও দগ্ধ হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। রোববার গভীর রাতে গাজা সিটির দারাজ উপকণ্ঠে ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে ইসরায়েল এ হামলা চালায়। বিস্ফোরণের পরপরই ওই স্কুলে আগুন ধরে যায়। একই দিনে উপত্যকার অন্য এলাকাগুলোতেও হামলা হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে ৬১ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে কয়েকশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যেসব শ্রেণিকক্ষে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেগুলো থেকে আগুনের শিখা বের হচ্ছে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের ওপর হামলাটি চালানো হয়। বিস্ফোরণের পর শিশুদের অনেকেই গুরুতর দগ্ধ হয়।

স্কুলটি অদূরেই বাস করে রামি রফিকের পরিবার। তিনি ফোনে বিবিসিকে বলেন, ‘সর্বত্র আগুন জ্বলছিল। আমি মাটিতে পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছি। ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।’ নিহতদের মধ্যে উত্তর গাজার হামাস পুলিশের তদন্ত প্রধান মোহাম্মদ আল-কাসিহ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা রয়েছেন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিসের বিবৃতিতে বলা হয়, এটা জাতিগত নিধনের আরেকটি ধাপ, যা আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার আইনের চরম লঙ্ঘন।

আল-আহলি হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফাদেল এল-নাইম জানান, উত্তর গাজার জাবালিয়ার একটি বাড়িতে পৃথক হামলায় ১৯ জন নিহত হন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ৪৮ ঘণ্টায় গাজার ২০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। রোববার রাতে জাবালিয়ায় আব্দ রাব্বো পরিবারের বাসভবনে বিমান হামলা করা হয়। এ ছাড়া গাজা সিটির পাশে বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতেও হামলা করা হয়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এরই মধ্যে নতুন স্থল অভিযানে উত্তর গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিয়েছে আইডিএফ। গতকাল সোমবার তারা উত্তরের ইন্দোনেশিয়া ও আল-আওদা হাসপাতাল ঘিরে ফেলে।

Exit mobile version