Home জাতীয় ঘরবন্দি উৎসব আনন্দ

ঘরবন্দি উৎসব আনন্দ

বাংলা কাগজ অনলাইন : রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবার ঘরে বসেই দেশবাসী পালন করলো পহেলা বৈশাখ। বাইরে যেতে না পারলেও অনেকে ঘরেই বৈশাখের পোশাক পরে ছবি তুলে যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনের সঙ্গে তোলা পুরোনো ছবিটি শেয়ার দিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন।

শুধু নিজেদের ছবি নয়, বাসায় কী কী রান্না হয়েছে, পান্তা ইলিশসহ রকমারি মুখরোচক ভর্তার ছবিও শেয়ার করেছেন তারা।

ইচ্ছা থাকলেও ঘরের বাইরে যাওয়ার জো নেই। যারা জরুরি কাজে বেরিয়েছেন তারাই নানা স্থানে বাধার সম্মুখীন হন। ঘোরাঘুরির তো প্রশ্নই ওঠে না। তাই ঘরে বসেই পারিবারিক আবহে নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে দিনভর পালিত হলো পহেলা বৈশাখ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ঘরে বসেই পহেলা বৈশাখ পালনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার পহেলা বৈশাখের সব ধরনের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। শুধু সাংস্কৃতিকবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘরোয়াভাবে যে কর্মসূচি পালন করেছে তা রেডিও টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশবাসী উপভোগ করেছেন।

সোমবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার সবাইকে অনুরোধ করব কাঁচা আম, জাম, পেয়ারা, তরমুজসহ নানা মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে বসেই নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করুন। আপনারা বিনা কারণে ঘরের বাইরে যাবেন না। অযথা কোথাও ভিড় করবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন, পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করুন।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে প্রায় মাসব্যাপী সাধারণ ছুটিতে এখন গৃহবন্দি সারাদেশের মানুষ। ফলে এবার অনেকটাই চাঞ্চল্যহীন নববর্ষ বরণ উৎসব। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করেই নববর্ষে জনসমাগম না করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা মহানগরীর জিগাতলায় বাস করেন শামসুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকরি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তার মেয়ে জোতি ও স্কুলপড়ুয়া সৃজনী দুজনই নববর্ষের শাড়ি, চুড়ি ও কপালে টিপ পরে বৈশাখী সাজে সেজেছে। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। এমনকি কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাসায়ও না। বাবা শামসুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত মেয়েদের বায়না মেটাতে ভবনের ছাদ পর্যন্ত গেছেন। এমনিভাবে অনেক বাসায় খবর নিয়ে দেখা গেছে এবারের বৈশাখী উৎসব বাসায়ই পালন করেছেন সবাই।

গ্রীন রোডের এক গৃহিণী মৌসুমী টেলিফোনে তার সারাদিনের কাজের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, ছেলে-মেয়েদের জন্য রান্না করেছি। ওরা নিজেরাই দিনভর সেজেছে। তার বাবাকে পাঞ্জাবি, আমাকে শাড়ি পরিয়ে বৈশাখের সাজে সাজিয়ে ছবি তুলেছে। বিভিন্ন আইটেমের খাবারের ছবি তুলে খালা ও মামাদের কাছে পাঠিয়েছে। সারাদিন ফেসবুকে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কাটিয়েছে দুজনই।

এমনিভাবে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে খবর নিয়ে জানা গেছে, এবারের বৈশাখ অনেকে ঘরেই পালন করেছেন। অনেক পরিবার ছেলে-মেয়ের আবদার মেটানোর জন্য বাড়িতেই পান্তা ইলিশ, আম-ডাল, শুঁটকি, কালোজিরা, তিল ও আলুর ভর্তাসহ বাংলা খাবারের আয়োজন করে বাসায় বাসায়। নিজেরাই পারিবারিকভাবে ঘরের মধ্যে পালন করেছে বৈশাখের উৎসব। গ্রামের বাড়িতেও ছেলে-মেয়েদের ঘর থেকে বের হতে দেননি বাবা-মা।

Exit mobile version