‘ভালোবাসা কত কি পারে’

তোমার কবিতা একবারেই প’ড়ে ফেলেছি,
যাকে ভালোবাসি তাঁর সৃষ্টি
একবারেই তরতর প’ড়ে ফেলা যায়
আত্মস্থ করা যায় বিমল চিত্তে,
অন্বিষ্ট আকর সংগ্রহে ঝিলমিল অন্তর যেমন!
সে কি তবে বোধগম্যতায় আবেগের আতিশয্য এক,
নাকি ভাবলোকে প্রেমালোকের
সরল এক গমণ গতি?
জলরঙে আঁকা বিমূর্ত ছবির মত
অস্পষ্ট উৎকীর্ণে ছোপছোপ
কেবলই বোধের বেগ বৃদ্ধি
আর ছবি আঁকে এক নয়নাভিরাম …।

ভালোবাসার বেগ তো জানি আঁধারময়তায় পথ খুঁজে ফিরে কেবলি,
জ্ঞানবোধ বিচারে জড় তমসায়
আবেগের মেঘপুঞ্জে হয়ে উঠে এক
রূপোলী শংখিনী বিজলী,
যাকে ভালোবাসা যায় তার সব ফুলেই সুরভী, আলিঙ্গন তার স্বর্নলতা যেন;
কবিতা তোমার তরতর প’ড়ে ফেলেছি,
যাকে ভালোবেসেছি তাঁর সবকিছুই
এ হৃদয় কাননে ফুলেল এক উৎসব মানি,
ভালোবাসারা তাই মেতে উঠুক,
আনন্দে জেগে থাকুক মোহমুগ্ধ,
ভরে উঠুক এ জীবন কাণায় কাণায়…..।

‘কেবল মানুষই পারেন’

জ্যোৎস্না রাতের শেষে
হৃদপদ্মে লেগে থাকা জ্যোতি সুষমা,
কখনও আবার আকুল ক্রন্দন শেষে
হৃদয় বৃষ্টি শেষের আকাশ যেন;
ঘনঘোর দুর্যোগ শেষে বেঁচে যাওয়ার বর ধ্বংসাবশেষ কোণে যেন তোমার আমার জীবনের গল্পকথার মত কথা ক’য়ে যায়।
আমাদের অন্তর্গত যুদ্ধ শেষে
আমরাও হ’তে পারি একাত্মার সৌরভ,
তবে কি তুমি হেমন্তের পাতা ঝরার দিনে ক্ষোভে কি
নির্মোহে, নিরিবিলি ব’সে ব’সে
ক্ষ’য়ে যাবে একাকী প্রাণের গহীনপুরে?

জীবনের অর্থ নয় তো কেবলই
প্রকৃতির সমান্তরালে সৃজন স্থিতি আর লয়ের এক চিরন্তন খেলা;
জীবনের মূল স্রোত তো এক গতিময় অবিনশ্বরতা দেখার আড়ালের
এক অন্ত:সলিলা,
মহাপ্রকৃতি সৃষ্টিক‚লে দর্পন স্বভাবে নোঙর ফেলে, আর গোপনে দেখে যায়
মানুষের স্বর্গীয় হ’য়ে উঠার আকুল চেষ্টা;
কেবল মানুষই পারেন ঈশ্বরের দ্ব›দ্বী হতে,
তবে কেন যুদ্ধাহতের প্রাণ তোমার আজও
আফিমের নেশার মত শুধুই যুদ্ধের দিকে?

মানুষ ম’রে যায়, তবুও ব’য়ে চলে প্রাণধারা
অন্ত:সলিলার মত সৃষ্টিবীজ আর কর্মপুঞ্জে ভর ক’রে বিবর্তিত হয় সবকিছু..
ম’রে যাওয়া গ্রাম শহর সভ্যতাও একদিন
ইতিহাসের রথে সময়ের যাত্রী হয়,
তাই এসো প্রাণের ধারাপাতে অপচয়ের
খাতায় শূণ্য ফেলে কোলাহলেও বুকে বুক
আর হাতে হাত রাখি সুনসান;
‘ঘৃণায় গড়ে না কিছু’ শ্বাশ্বত শ্লোকের এমত বিশ্বাসে, শুধু ভালোবাসার মহামন্ত্রে একাত্মার সৌরভ হই তুমি আমি সকলে;
জানতো কেবল মানুষই পারেন ঈশ্বরের দ্ব›দ্বী হ’তে?….

‘ভালোবাসা ঝিলঝিল’

জ্যোতির্ময় তনুলতা তোমার,
এ প্রাণময় হাত ছুঁয়ে দিলেই
পূর্ণিমার হাসিতে জ্বলজ্বলে
চিকচিক তুমি!

অথচ এ ভালোবাসাবাসি
ক্লান্ত হ’লো একদিন,
দূর বহুদূরে চ’লে গেলে তুমি;
আজ এই স্মৃতির উৎসব রাতে
জ্বলজ্বলে তারার মত
হৃদ আকাশে জ্বলছ তুমি
কেবলই আমার সবটা পুঁড়িয়ে….