অনলাইন ডেস্ক : কানাডায় ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম ২০২২ সালের জানুয়ারিতেই শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থেরেসা টেম। সিবিসি রেডিও-কানাডার সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে আমরা একটি মাইলফলক অর্জন করেছি। ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের আমরা টিকা দেয়া শুরু করেছি। এখন নবজাতক ও টডলারদেরও আমরা টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছি। আশা করছি আগামী বছরের শুরুতেই এটির অনুমোদন পাওয়া যাবে।’

কানাডায় ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে কয়েক দফা এটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এদিকে মর্ডানাও শিশুদের মধ্যে তাদের টিকার ট্রায়াল দিয়েছে। তারা এখন হেলথ কানাডার চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হেলথ কানাডা সবুজ সঙ্কেত দিলে তারাও ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের টিকা দেয়া শুরু করবে।

থেরেসা টেম বলেন, বিভিন্ন কোম্পানি ইনফ্যান্ট ও টডলারদের টিকার ট্রায়াল দিচ্ছে। ঠিক কখন এই টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন মিলবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এটি নির্ভর করছে কত দ্রæত টেস্টের ফলাফল পাওয়া যাবে এবং আমরা কি পরিমাণ জনবল এই কাজে নিয়োগ করতে পারব-তার ওপর। তবে তিনি আশা করছেন ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের রেজাল্ট খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে। হতে পারে এটা ডিসেম্বরেই জানা যাবে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারিতে আমরা পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে পারব। তিনি বলেন, শিশুদের টিকার আওতায় আনতে পারলে বাবা-মায়েরা অনেকটাই চিন্তামুক্ত হতে পারবেন। কেননা এই টিকা হবে করোনা মহামারি থেকে সুরক্ষা পাওয়ার একটি বাড়তি আবরণ। এই আবরণ শুধু শিশুদের নয়-তাদের বাবা-মাকেও করোনা থেকে সুরক্ষা এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে। এদিকে আলবার্টায় ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের করোনা টিকা দেয়ার কাজ গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রদেশজুড়ে ১২০ টি কেন্দ্রে এই টিকা দেয়া হচ্ছে। অন্টারিওতেও শিশুদের টিকা নেয়ার আগ্রহ বাড়ছে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে বয়স্ক শিশুদের টিকা দেয়া আগামী সপ্তাহে শুরু হবে। প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আড্রিয়ান ডিকস সবাইকে টিকার জন্য নিবন্ধন করার অনুরোধ জানিয়েছেন। মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের শরীরে তাদের টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্রে গত মাসে ২ হাজারেরও বেশি শিশুর ওপর ফাইজার এন বায়োটেক টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়। করোনার উপসর্গ ছিল, এমন শিশুদের ২ ডোজ টিকা দেয়ার এক সপ্তাহ পর তাদের শরীরে ৯০.৭% এন্টিবডির অসিন্তত্ব পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। প্রসঙ্গত, পূর্ণবয়স্কদের জন্য ফাইজারের প্রতিটি টিকার ডোজ হয় ৩০ মাইক্রোগ্রামের। তবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি ডোজ ১০ মাইক্রোগ্রাম রাখা হয়েছে। ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে টিকার ২ ডোজ দিতে হবে। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি ডোজ ৫ মাইক্রোগ্রাম হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফাইজার জানিয়েছে, করোনায় বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কম হলেও তা একেবারে নগন্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় এ পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী ১৫৮ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সূত্র : সিবিসি ও রেডিও কানাডা