অনলাইন ডেস্ক : মস্কোর দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট এবং লুকোয়েলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর সমুদ্রপথে রাশিয়ান তেল কেনা স্থগিত করেছে চীনা রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) একাধিক বাণিজ্য সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
রাশিয়ার প্রধান দুই ক্রেতা চীন ও ভারত। তবে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে গিয়ে ভারতের রিফাইনারিগুলোও রুশ তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে রাশিয়ার তেল রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে এবং বৈশ্বিক তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার তেল কোম্পানি পেট্রোচায়না, সিনোপেক, সিএনওওসি এবং জেনহুয়া অয়েল অন্তত স্বল্পমেয়াদে সমুদ্রপথে রাশিয়ান তেল বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির কারণে তারা নতুন কোনো চালান নিচ্ছে না বলে জানা গেছে।
চীন সমুদ্রপথে প্রতিদিন প্রায় ১.৪ মিলিয়ন ব্যারেল রাশিয়ান তেল আমদানি করে। তবে এর বেশিরভাগই ছোট স্বাধীন রিফাইনারি বা তথাকথিত ‘টিপট’ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে আসে। ভর্টেক্সা অ্যানালিটিক্সের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে চীনা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো দ্বারা রাশিয়ান তেল ক্রয়ের পরিমাণ দিনে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। অন্যদিকে এনার্জি অ্যাসপেক্টস পরামর্শদাতা সংস্থা জানায়, এর পরিমাণ দিনে প্রায় ৫ লাখ ব্যারেল।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোসনেফ্ট এবং লুকোয়েল তাদের বেশিরভাগ তেল ক্রেতাদের সাথে সরাসরি লেনদেনের পরিবর্তে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে চীনের কাছে বিক্রি করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে ছোট স্বাধীন রিফাইনারি কোম্পানিগুলোরও ক্রয় বন্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাশিয়ান তেল ক্রয় চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।
বর্তমানে চীন প্রতিদিন প্রায় ৯ লাখ ব্যারেল রুশ তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করে। এই তেল মূলত পেট্রোচায়নার নিয়ন্ত্রণে আসে। বাণিজ্যিক সূত্রগুলো বলছে, এই পাইপলাইন সরবরাহে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব তেমন পড়বে না।
রাশিয়ার তেল কেনা কমানোর কারণে চীন ও ভারত এখন মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা থেকে বিকল্প তেলের উৎস খুঁজছে। বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে নিষেধাজ্ঞামুক্ত তেলের দাম বাড়তে পারে।
